গাজীপুরে দুই মহাসড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ, তবে যানজট নেই

সকাল থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। আজ শুক্রবারছবি: প্রথম আলো

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে শহর ছেড়ে গ্রামের পথে কর্মজীবী মানুষেরা। গত দুই দিন মহাসড়কে চাপ অনেকটা কম ছিল। আজ শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এতে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পরিবহনের জটলা বেঁধেছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় কোনো যানজট ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়নি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। গতকাল রাতভর ঘরমুখী মানুষ বাড়ি ফিরেছেন। এখন পর্যন্ত ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরতে পারছেন যাত্রীরা। মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে জেলা, মেট্রোপলিটন ও হাইওয়ে পুলিশের চার হাজার সদস্য।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গত রাতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রায় যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কের উত্তরবঙ্গগামী গাড়ি একপাশে থেমে থাকে, এতে উপজেলার সফিপুর উড়ালসড়ক থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত দীর্ঘ জটলার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি চন্দ্রায় যানবাহনের চাপ থাকায় ওই সেখানে ধীরগতিতে গাড়ি চললেও যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

অপর দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস, বোর্ডবাজার, সালনা ও টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় কয়েকটি পয়েন্ট জটলা বেঁধেছে।

এদিকে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে আজ সকাল থেকে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। ট্রেন এলেই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করছেন। দুপুরের পর স্টেশনে আরও চাপ বাড়বে বলে জানান স্টেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ অধিকাংশ পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণার কথা রয়েছে। বিকেলের দিকে মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবার ঈদে তুলনামূলক বেশি ছুটি থাকায় অনেক মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন।

হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় জেলা, মেট্রোপলিটন ও হাইওয়ে পুলিশের চার হাজার সদস্য কাজ করছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে নেই যানজট
ছবি: প্রথম আলো

ভোগান্তি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ ছাড়ছেন যাত্রীরা

আজ ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি। এতে যাত্রীরা স্বস্তিতে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে গেলেও প্রত্যাশিত যাত্রী না পেয়ে হতাশ পরিবহনশ্রমিকেরা।

সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় কম যাত্রী সমাগম দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর উপস্থিতি আরও কমতে থাকে। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত গণপরিবহন সড়কে থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে যানজট তৈরি হয়নি। যাত্রী না পেয়ে হতাশ পরিবহনশ্রমিকেরা আজ বিকেলের অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের কারও কারও আশা, আজ নারায়ণগঞ্জের কিছু তৈরি পোশাক কারখানা ছুটি হলে বিকেল নাগাদ যাত্রী বাড়বে।

যাত্রীদের অভিযোগ টিকিট পেতে কোনো সমস্যা না হলেও সিট পূর্ণ না হওয়ার অজুহাতে এক ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি করে বাস ছেড়ে যাচ্ছে কাউন্টারগুলো থেকে। এতে তাঁরা একপ্রকার ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

পরিবহনশ্রমিকেরা বলছেন, ঈদের সময় ঢাকা নারায়ণগঞ্জ থেকে সিট পূর্ণ করে বাস ছাড়তে হয়। কারণ, এ সময় ফিরতি ট্রিপ থাকে যাত্রীশূন্য। ফলে তাঁরা বেশি সময় অপেক্ষা করে বাসের সিট পূর্ণ করছেন। যেহেতু বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন না এবং টিকিট পেতেও ভোগান্তি নেই, ফলে যাত্রীরাও এতটুকু ছাড় দিচ্ছেন।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ বলেন, বৃহস্পতিবার যাত্রীরা স্বস্তি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছেন। আজ সকালটাও ছিল ভোগান্তিহীন। এবারের ঈদযাত্রায় বড় ধরনের কোনো ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশ পাড়ি দেবেন।