খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিএনপির অনশন কর্মসূচি

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজশাহীতে বিএনপির অনশন চলছে। আজ শনিবার নগরের মালোপাড়া এলাকায় ভুবনমোহন পার্কেছবি: প্রথম আলো

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন মহানগর ও জেলা শহরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার সকাল থেকে এসব কর্মসূচি শুরু হয়, যা চলবে দুপুর পর্যন্ত।

রাজশাহী

আজ সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের মালোপাড়া এলাকায় ভুবনমোহন পার্কে অনশন কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান (মিনু)। এ ছাড়া উপস্থিত আছেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলার সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সিকদার প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী। সঞ্চালনা করছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা।

অনশন কর্মসূচি উপলক্ষে ভুবনমোহন পার্কে শামিয়ানা টানিয়ে সামনের দিকে চেয়ার দেওয়া হয়েছে। নেতারা চেয়ারে বসে আছেন। আর অন্য নেতা-কর্মীরা শামিয়ানার নিচে বিছানো চটে বসে বক্তব্য শুনছেন।

সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে মঞ্চে বক্তব্য শুরু হয়। রাজশাহী মহানগর ও জেলা পর্যায়ের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। বেলা ১১টার পর ছাত্রদল, যুবদলসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। কর্মসূচির শেষ দিকে বিএনপির নেতারা বক্তব্য দেবেন।

স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা বক্তব্যে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। এখনই তাঁর সুচিকিৎসা প্রয়োজন। তাঁর চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে না পারলে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। তাই রাজপথে সর্বাত্মক আন্দোলন দরকার। তবে দীর্ঘদিন ধরে এমন আন্দোলন দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ঢাকা ঘেরাও ছাড়া, গণভবন ঘেরাও ছাড়া সরকারের টনক নড়বে না। এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দিতে হবে।

নেত্রকোনা

নেত্রকোনায় আজ সকাল আটটার দিকে শহরের বনোয়াপাড়া মদন-কেন্দুয়া বাসস্টেশন এলাকায় জেলা বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে দলের অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন।

এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজেজুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান, জেলা কৃষক দলের সভাপতি সালিউদ্দিন খান, জেলা যুবদলের সভাপতি মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শাহাবউদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার জাহান, সাধারণ সম্পাদক অনীক মাহমুদ চৌধুরী, শ্রমিক দলের সভাপতি আকিকুর রেজা চৌধুরী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হাফিজা ইসলাম প্রমুখ।

নেত্রকোনায় আজ সকাল আটটার দিকে শহরের বনোয়াপাড়া মদন-কেন্দুয়া বাসস্টেশন এলাকায় জেলা বিএনপি অনশন কর্মসূচির আয়োজন করে
ছবি: প্রথম আলো

দলের সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, ‘দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় ধরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে দেশনেত্রী বেগম জিয়া চিকিৎসাধীন। গত তিন সপ্তাহে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে চারবার সিসিইউতে নেওয়া হয়। তাঁর বর্তমান অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। তিনি মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর (খালেদা জিয়া) চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। দেশে তাঁর চিকিৎসার সুযোগ নেই। তাঁকে বিদেশে পাঠানো হলে জীবন রক্ষা হতে পারে। তাই সরকারকে আমরা আহ্বান জানাই, দ্রুত তাঁকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। না হলে বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যাবে।’

জেলা বিএনপির সভাপতি ও অর্থোপেডিক চিকিৎসক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, ‘বেগম জিয়াকে সরকার মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিক প্রভৃতি রোগে ভুগছেন। এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হলেও প্রতিহিংসার বশে তা নাকচ করে দেয় সরকার। গণমানুষের দাবি এখন একটাই—বেগম জিয়াকে দ্রুত বিদেশে সুচিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক।’

প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন প্রতিনিধি, রাজশাহী ও নেত্রকোনা