মসলা কিনে নিতে বলায় হলের বাবুর্চিকে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর, তদন্ত কমিটি গঠন

মারধরপ্রতীকী ছবি

রান্নার জন্য আবাসিক হলের সহকারী বাবুর্চির কাছে মসলা চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির দুই নেতা। ওই বাবুর্চি তাঁদের মসলা দিয়েছেনও। কিন্তু পরেরবার দোকান থেকে মসলা কিনে নিতে বলায় তাঁকে ওই নেতারা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে এ ঘটনা ঘটেছে। মারধরের শিকার ওই সহাকারী বাবুর্চির নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।

যে দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন আরিফুল ইসলাম ও মোর্শেদুল আলম। আরিফুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মোর্শেদুল আন্তর্জাতিক–বিষয়ক সম্পাদক পদে ছিলেন। দুজনই ক্যাম্পাসে নিজেদের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা রান্না করার জন্য আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচসহ বিভিন্ন মসলা নিতে ডাইনিংয়ে এসেছিলেন। আগেও তাঁরা মসলা নিয়েছেন। কিন্তু কখনোই টাকাপয়সা দেন না। এবারও তাঁদের চাহিদামতো মসলা দিয়েছি। তবে অনুরোধ করেছিলাম, পরেরবার যেন দোকান থেকে তাঁরা মসলা কিনে নেন। জিনিসপত্রের যে দাম, এভাবে মসলা দিলে ডাইনিং চালাতে হিমশিম খেতে হয়।

আরও পড়ুন

মোহাম্মদ আলী আরও জানান, দোকান থেকে মসলা কিনে নেওয়ার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগের দুই নেতা তাঁকে কিলঘুষি মারেন। শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় তিনটি লাথি দেন। ভবিষ্যতে আর কোনো দিন হলে ঢুকলে মারধর করা হবে বলেও হুমকি দেন।

ঘটনার সময় ডাইনিংয়ের অন্য কর্মচারীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করান উল্লেখ করে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি এই ঘটনার বিচার চাই। মৌখিকভাবে হল প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে লিখিত অভিযোগ দেব।’

আরও পড়ুন

এদিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরিফুল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলের অন্য ছাত্রদের সঙ্গে ডাইনিংয়ের এক কর্মচারীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছিল। এটি শুনে ডাইনিংয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিই। কাউকে মারধর করিনি।’

অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে মোর্শেদুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা কেটে দেন। পরে তিনি আর কল করেননি।

ঘটনা তদন্তে আজ বৃহস্পতিবার শাহ আমানত হলের জ্যেষ্ঠ আবাসিক শিক্ষক দিদারুল আলম চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মারধরের ঘটনা শুনেছি। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন