ভাসানচরে পৌঁছাল আরও ১ হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে আরও ১ হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছান। বুধবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে গেল আরও ১ হাজার ৫২৭ জন রোহিঙ্গা। আজ বুধবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে নৌবাহিনীর ছয়টি জাহাজে তাঁরা চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে এসে পৌঁছান। একই সময় ভাসানচর থেকে কক্সবাজারে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া ৬৪০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে ফিরে আসে।

ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের (আরআরআরসি) উপসচিব মো. মাহফুজের রহমান বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, নৌবাহিনীর জাহাজে রোহিঙ্গারা ভাসানচর পৌঁছানোর পর তাদের পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কক্ষে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়ে ব্রিফিং করা হয়।

আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে বাসে করে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাতে তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া আশ্রয়শিবির থেকে ৩২ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

উখিয়া-টেকনাফ আশ্রয়শিবিরে চাপ কমাতে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সরকারি তথ্যমতে, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই জায়গায় ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

আরআরআরসি কার্যালয় সূত্র জানায়, এর আগে ২২ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে ভাসানচরে ৩২ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় স্থানান্তর করা হয় ১ হাজার ৬৪২ জন, ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জন, পরের বছর ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফায় স্থানান্তর করা হয় ৩ হাজার ২৪২ জনকে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা শুরু হলে পরের কয়েক মাসে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে আসে আরও কয়েক লাখ। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।

ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলম ভূঁইয়া বলেন, নতুন রোহিঙ্গাদের নৌবাহিনীর পেঙ্গুইন, তিমি, ডলফিন, টুনা জাহাজে নিয়ে আসা হয়। এরপর নৌবাহিনীর পন্টুনসংলগ্ন হেলিপ্যাডে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে গাড়ির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস্টারে বসবাসের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।