মেহেরপুরে বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

মেহেরপুরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ১৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে জেলার তিনটি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে নাশকতার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গাংনী উপজেলার বামুন্দী ইউনিয়নের নিশিপুর ওয়ার্ডের সদস্য শাহ আলম (৪৩), স্থানীয় বাসিন্দা শাওন ইসলাম (৪৫), আশরাফুল ইসলাম (৪০), মহিবুল ইসলাম (৪১)। গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কামরুল ইসলাম (৫০), আবদুল হক (৩৬), মনিরুজ্জামান (৪৫)। মুজিবনগর উপজেলার বিদ্ধাধরপুর গ্রামের আবদুল খালেক (৪৩), শিবপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম রাহুল (৩২), আজিমুদ্দীন গাজী (৪৩), জয়পুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক (৪৬), মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের ফয়জুল কবীর মাস্টার (৪৬), একই গ্রামের সাখায়ত হোসেন ৪৪)।

গ্রেপ্তার মহিবুল ইসলামের স্ত্রী রোজী খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী বামুন্দী বাজারে নিজের দোকানে ছিলেন। হঠাৎ পুলিশ কিছু না বলে তাঁকে গাড়িতে তুলে নেয়। এ ঘটনা বাজারে ছড়িয়ে পড়লে স্বামীর বন্ধু শাওন বামুন্দী পুলিশ ফাঁড়িতে গেলে তাঁকেও আটক করা হয়।’

গাংনী থানা-পুলিশ বলছে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা বামুন্দী শহরে উত্তেজনা তৈরি করতে ককটেল নিয়ে একটি মাদ্রাসা মাঠে অবস্থান করছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে বামুন্দী পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল অভিযান চালালে তাঁরা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় চারজন বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়তি সন্দেহ বিএনপির ৮ নেতা-কর্মীকে আটক করেছেন বামুন্দী পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা। এ সময় সেখান থেকে পাঁচটি ককটলে, দুটি দেশীয় অস্ত্র (রামদা) ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার করা হয়েছে।

গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জান বলেন, আজ শনিবার ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। কর্মসূচি যাতে পালন না করা যায়, সেই লক্ষ্যে সরকার পুলিশ দিয়ে আটক করছে বিএনপির নেতা–কর্মীদের।

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুণ প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করে আন্দোলন দমাতে অহেতুক মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করছে। বামুন্দী বাজারে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁরা সবাই বিএনপির সক্রিয় কর্মী। শাহ আলমকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এসব করে সরকার কতটা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে তার প্রমাণ দিচ্ছে।

মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, মুজিবনগর উপজেলার গরিনগর গ্রামের মাঠে একটি বৈঠক করছিলেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। মুজিবনগর থানা-পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চারজন বিএনপি কর্মীকে আটক করা হয়। এ সময় পালিয়ে যান বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। পরে সদর উপজেলার আমুঝুপি গ্রামে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশের একটি দল। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মুজিবনগর থানায় করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম বলেন, নাশকতা মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ২৫ জনকে আটকের চেষ্টা চলছে।