নরসিংদীর দুই ইউপিতে নৌকা তৃতীয়, একটিতে ‘বিদ্রোহী’ আরেকটিতে ইসলামী আন্দোলনের জয়
নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুরা ও নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের দুই প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। তাঁদের পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুই প্রার্থী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার জাকির মাহমুদ এই ফলাফল ঘোষণা করেন। মহিষাশুরা ইউনিয়নে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. কাউছার হোসেন এবং নুরালাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও টেলিফোন প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ হোসেন বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের অবস্থান তৃতীয়।
এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ইভিএমে ভোট দেন দুই ইউনিয়নের ভোটাররা। উভয় স্থানেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, মহিষাশুরা ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. কাউছার হোসেন হাতপাখা প্রতীকে ৮ হাজার ৩৬৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের মো. আলমগীর পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৩৯ ভোট। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক পেয়েছেন ৪ হাজার ১৫৫ ভোট। অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে মোটরসাইকেল প্রতীকে মো. রতন মিয়া পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৪ ভোট ও চশমা প্রতীকের মো. জয়নাল আবেদীন পেয়েছেন ১২৫ ভোট। ইউনিয়নটিতে মোট ২৭ হাজার ৯০১ জন ভোটারের মধ্যে ১৯ হাজার ৩০৮ জন তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
অন্যদিকে নুরালাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ হোসেন টেলিফোন প্রতীকে ৭ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের খাদেমুল ইসলাম পেয়েছেন ৬ হাজার ৮৪৮ ভোট। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. জাকারিয়া পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৯১ ভোট। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. বিল্লাল হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ১৫৪ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসির ভূঁইয়া চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৬১ ভোট ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. বিল্লাল হোসেন লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৫৮ ভোট। ইউনিয়নটিতে ৩১ হাজার ২৬৪ জন ভোটারের মধ্যে ২১ হাজার ২৫৯ জন ভোটার ভোট দেন।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকতা জাকির মাহমুদ জানান, দুই ইউনিয়ন মিলিয়ে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, সদস্য পদে ৮৯ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দুই ইউপিতেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর মধ্যে মহিষাশুরা ইউনিয়নে ৬৯ শতাংশ ও নুরালাপুরে ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।