‘চায়ের রাজ্য’ শ্রীমঙ্গল পর্যটকশূন্য, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে পর্যটকের আনাগোনা কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রাধানগর এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও কারফিউ বলবৎ থাকায় মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে লোকসানে পড়েছেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

শ্রীমঙ্গল চায়ের রাজ্য হিসেবে পরিচিত। এখানকার সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য ও দশর্নীয় স্থান মুগ্ধ করে পর্যটকদের। তাই সারা বছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর শ্রীমঙ্গলে কমতে শুরু করেছিল পর্যটকের সংখ্যা। গত প্রায় ১০ দিনে নতুন করে কোনো পর্যটক আসেননি। আগে যেসব পর্যটক এসেছিলেন তাঁরা ফিরে গেছেন। এখন শ্রীমঙ্গলে পর্যটক নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের শ্রীমঙ্গল শাখার সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম বলেন, দেশের পর্যটকদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি পর্যটক বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতি কথা বিদেশি পর্যটকেরা জানতে পেরেছেন। দূতাবাস থেকে স্ব–স্ব দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ জন্য বিদেশি পর্যটকেরা ঘুরতে বের হচ্ছেন না। বিদেশ থেকেও কেউ আসছেন না।

রাসেল আলম আরও বলেন, ‘বিদেশি পর্যটকেরা যখন দেশের বাইরে যান, তখন প্রায় তিন-চার মাস আগেই পরিকল্পনা শুরু করেন। আমাদের দেশে হয়তো কিছুদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু বিদেশি অনেক পর্যটকই বাংলাদেশের আসার পরিকল্পনা বাতিল করতে পারেন। শীতের শুরু অর্থাৎ অক্টোবরে দেশি–বিদেশি পর্যটকেরা ঘুরতে বের হন। আর মাত্র কয়েকটি মাস বাকি। পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে যাবে। দেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

আরও পড়ুন

পর্যটক কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে আছে অনেক রেস্তোরাঁ। চামুং রেস্টুরেন্টের মালিক তাপস দাশ বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলের অনেক রেস্তোরাঁ পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে। গত ১০ দিন রেস্টুরেন্ট মালিকেরা লোকসানে আছি। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গল না আসায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

আরও পড়ুন

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাবেক সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক দিন পর্যটক নেই। সব হোটেল রিসোর্ট প্রায় ফাঁকা। দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দূরপাল্লার গাড়ি সঠিক সময়ে না চলা, ট্রেন বন্ধ থাকা ও কারফিউ জারি থাকায় পর্যটকেরা আসছেন না। অনেকে এই পরিস্থিতিতে নিজস্ব গাড়ি বের করতে বা পরিবার নিয়ে ঘুরতে সাহস পাচ্ছেন না।’  

সেলিম আহমেদ জানান, অনেকে ফেসবুকে প্রচারণা ও মার্কেটিং করেন। ইন্টারনেট পুরোপুরি সচল না থাকায় কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এ ভাবে চললে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।