আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয়, তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারবেন। ভোট গ্রহণের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর অপরিবর্তিত রেখে তফসিলও পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে জরুরি সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি ও নির্বাচনকে অধিকতর অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। এ জন্য নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় এক দিন বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম বর্ষের ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও হল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতা থাকলে সামনে আর কোনো চ্যালেঞ্জ নেই।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে গত রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের একটি চেয়ার ভাঙচুর ও একটি টেবিল উল্টে দেওয়া হয়। পরে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র তুলতে গেলে তাঁদের ঘিরে ধরেন ছাত্রদলের কর্মীরা। দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও কয়েকজন সাবেক সমন্বয়কের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে যান।
দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। দফায় দফায় ধস্তাধস্তি ও বাগ্বিতণ্ডার পর সমন্বয়কদের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থীরা রাকসু ভবনের ফটকের তালা ভেঙে ফেলেন। এরপরও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ফটকে অবস্থান করছিলেন। বেলা একটার দিকে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা মনোনয়নপত্র তুলতে গেলে আরেক দফা ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। তাঁদের প্রতিরোধে ছাত্রদল রাকসু কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যায়। চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বেলা দুইটার দিকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। গতকাল সোমবারও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা প্রশাসন ভবনের সামনে তিন ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ (রাহী) বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্যই এই আন্দোলন করেছি। নির্বাচন নিয়ে আমাদের আর কোনো দাবি নেই। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই আমরা প্রত্যাশা করছি।’
ষষ্ঠবারের মতো তফসিল পুনর্বিন্যাস
আজ মঙ্গলবার ষষ্ঠবারের মতো পুনর্বিন্যাস করা হলো রাকসু নির্বাচনের তফসিল। এ ছাড়া নির্বাচনের তারিখও দুবার পরিবর্তন করা হয়েছে। পুনর্বিন্যস্ত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় আরও এক দিন বাড়িয়ে আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ ও ৭ সেপ্টেম্বর।
এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাছাই ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ১০ সেপ্টেম্বর, প্রাথমিক তালিকার প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১৩ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৪ সেপ্টেম্বর এবং ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একাডেমিক ভবনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে।