‘সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে বলে আমরা প্রথম আলো পড়ি। প্রথম আলো কখনো সত্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। এই সত্য বিবেকের সত্য। প্রথম আলোর ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে যায়, এরপরও প্রথম আলো লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয় না। জুলাই গণ–আন্দোলনের সময় আমরা তাকিয়ে থাকতাম প্রথম আলোর দিকে। কারণ প্রথম আলোই সঠিক খবরটি তখন প্রচার করেছে।’
আজ শনিবার বিকেলে নোয়াখালী পৌরসভার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হোসেন কচি কনভেনশন হলে প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, নারী অধিকারকর্মী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ জেলার বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক, লেখক ও কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী, জেলার প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও নোয়াখালী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মুহাম্মদ রফিক উল্যাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবদুজ জাহের, নারী অধিকার জোটের সাবেক সভানেত্রী লায়লা পারভীন প্রমুখ।
প্রবীণ শিক্ষাবিদ নোয়াখালী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী রফিক উল্যাহ বলেন, ‘প্রথম আলো কখনো সত্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। এই সত্য বিবেকের সত্য। এই সত্য বুদ্ধির সত্য। এই সত্য গণমানুষের মনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশের সত্য। প্রথম আলো সেই সত্য নিয়ে ভবিষ্যতে সম্ভাবনাময় যে বাংলাদেশ উন্মুখ হয়ে আছে, বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্যের অনুসারী হয়ে, উৎসাহিত করে নতুন বাংলাদেশ আমরা আশা করব প্রথম আলোর সাহায্যে।’
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘ আমরা ২৭ বছর ধরে টিকে আছি। আমরা যে এত কথা বলছি, এত লিখছি, টিকে আছি, আমাদের মূল শক্তিটা কোত্থেকে এল? এই শক্তি হলো সত্য, সত্যই সাহস। সত্য বলেছি বলে আজকেও এভাবে কথাটা বলে যেতে পারছি। আপনারা জানেন, গত সরকারের আমলে আমরা বারবার কীভাবে প্রতিটা ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সত্য প্রকাশে কখনো বিরত থাকিনি।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বাদল বলেন, ‘প্রথম আলোর যখন সমালোচনা হয়, তখন আমরা ধরে নিই প্রথম আলো ঠিক জায়গায় আছে। পথে পথে ঘুরে কে বই বিক্রি করছেন, কোথায় একটি দুর্লভ পাখি হারিয়ে যাচ্ছে—সেই খবরগুলো আমরা প্রথম আলোতেই দেখতে পাই। আবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে গবেষণাধর্মী লেখার কথা মনে পড়লেই মনে পড়ে মিজানুর রহমান খানের কথা। তিনি মার্কিন মহাফেজখানায় গবেষণা করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে এনেছেন। আজ সেই মিজানুর রহমান আমাদের মাঝে নেই।’
নারীনেত্রী লায়লা পারভীন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় আমরা প্রথম আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম সঠিক খবরটি পাওয়ার জন্য। অনেক চ্যানেল আমরা দেখি, পত্রিকা পড়ি, কিন্তু আমরা আস্থা রাখতে চাই প্রথম আলোর প্রতি। আমরা মনে করি, সব অন্ধকার কাটিয়ে প্রথম আলো সত্য উদ্ঘাটন করে, সে জন্যই আমাদের আস্থা প্রথম আলোর প্রতি।’
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, ‘সঠিক সংবাদ পরিবেশনের জন্যই আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছে প্রথম আলো। গণতন্ত্র রক্ষার কাজ করে যাবে।’
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চ পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, ‘প্রথম আলোর স্লোগান ভালোর সাথে আলোর পথে। এই স্লোগান যদি ব্যক্তিজীবনে প্রত্যেক মানুষ প্রতিটি রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর হবে। কোনো প্রতিহিংসা থাকবে না।’
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নোয়াখালীর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি আসিফ আহমেদ। সহযোগিতায় ছিল নোয়াখালী বন্ধুসভা। আবৃত্তি পরিবেশন করে বন্ধুসভার বন্ধু শাহিদা রেশমী।