বাড়ির পাশে ডোবা থেকে গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বাড়ির পাশে ডোবায় কচুরিপানার নিচ থেকে গৃহবধূর হাত–পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত শিউলি আক্তার উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের লাড়ুচৌ গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী। এ দম্পতির চার ছেলে রয়েছে। শিউলি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ও জড়না বেগম দম্পতির মেয়ে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে জড়না বেগম বাদী হয়ে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে সুমন মিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়াকে কেন্দ্র করে কলহের জেরে ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে। লাশ গুম করার জন্য কচুরিপানার নিচে ডোবায় ফেলে রেখেছিলেন তাঁর স্বামী। ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূর লাশ তাঁর বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী সুমন মিয়াকে আজ সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৮ বছর আগে সুমন মিয়া ও শিউলি আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। সুমন মিয়া প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন, বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিসও  হয়েছে। কয়েক মাস আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে সুমন মিয়াকে ৮০ হাজার টাকা একটি ষাঁড় কিনে দেওয়া হয়। কয়েক দিন আগে তিনি আবারও বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেন। তখন শিউলি আক্তারের প্রবাসী ভাই ৩০ হাজার টাকা দেন। এসব বিষয় নিয়ে গত শুক্রবার সুমন মিয়া ও শিউলি আক্তারের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার পর শিউলি আক্তারকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না।

শিউলি আক্তারের ছেলে মো. রিহান বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে ঘরে এসে দেখি মা শুয়ে আছে। আমাকে বলল, “ভাত নিয়ে খাও।” আমি ভাত না খেয়ে একটু ঘুরতে বের হই। রাত ৯টার দিকে এসে দেখি আমাদের ঘরের দরজা আটকানো। ঘরে কেউ নেই। মাকে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু তাঁর সন্ধান পাইনি। শনিবার বিকেলে নানার বাড়ির লোকজনসহ খোঁজাখুঁজি শুরু করি। একপর্যায়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের একটি ডোবায় কচুরিপানার নিচে কাপড়ের অংশ দেখা যায়।

কচুরিপানার নিচ থেকে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় মায়ের লাশ বের হয়ে আসে।’
মামলার বাদী জড়না বেগম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সুমন মিয়া টাকার জন্য মেয়েকে মারধর করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমরা তাঁকে ৩০ হাজার টাকা দিই। সুমন মিয়া তাঁকে খুন করে লাশ গুম করার জন্য ডোবার মধ্যে ফেলে রাখে। মেয়ের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিথুন কুমার মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর হাত–পা বাঁধা এবং মুখ ও কপালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।