পাবনায় ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, আহত ২৫
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় একটি ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপির সমর্থক।
এ ঘটনায় বিএনপির সমর্থক জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে আজ রোববার সকালে ভাঙ্গুড়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন পুকুরপাড় গ্রামের নিরজাব আলী (৫০), সাহাদত হোসেন (৪৬), ছানোয়ার হোসেন (৩৮) ও আবদুল মালেক (৪৫)। এ ছাড়া সংঘর্ষে আহত ১৪ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন বিএনপির সমর্থক আবুল কালাম-১ (৪৫), আকরাম হোসেন (৪০), সাদ্দাম হোসেন (৩৬), আবুল কালাম-২ (৪৬), গাজীউর রহমান (৪৬), আবদুল জব্বার (৪৭), ঈমন আলী (৪০), আবদুল মমিন (৩৭), ছাব্বির হোসেন (৩৫), শাহিন হোসেন (৪০), হেলাল উদ্দিন (৩৫), আবু তালেব (৪২) ও আলো প্রামাণিক (৪৫)। পলাতক থাকায় আওয়ামী লীগের আহত সমর্থকদের নাম জানা যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুকুরপাড় গ্রামে শতাধিক সদস্যবিশিষ্ট ‘উদয়ন সংঘ’ নামের একটি ক্লাব রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্লাবটি খানমরিচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফয়জুল ইসলাম, সানোয়ার হোসেন, আহম্মদ আলী ও রওশন আলী নামের কয়েকজনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপির সমর্থক সালাম ফকির, শামসুল ইসলাস ও হেলাল উদ্দিন ক্লাবটি নিয়ন্ত্রণে নেন।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সম্প্রতি আবার আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা ক্লাবটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কয়েক দিন আগে তাঁরা বিএনপির সমর্থক সালাম ফকিরের কাছ থেকে জোরপূর্বক ক্লাবের চাবি নিয়ে নেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা সংগঠিত হয়ে ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তাঁরা গ্রামছাড়া আছেন বলে জানা গেছে।
তবে এই সংঘর্ষের বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর মুজাহিদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। আমরা ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, ‘ক্লাবের চাবি নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’