নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র

শরীয়তপুর জজ আদালতের সরকারি আইনজীবী (জিপি) আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় মামলাটি করেন।

গতকাল বুধবার রাতে করা ওই মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, আলমগীর মুন্সী নির্বাচন কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হন।

মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন আহাম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পালং মডেল থানা ও নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান (উজ্জ্বল) ঘোড়া প্রতীকে লড়ছেন। কামরুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন শরীয়তপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর মুন্সী।

সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনসংক্রান্ত কিছু গোপন নথি আলমগীর মুন্সী দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক। ওই নথি না দেখানোর কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। মারধর করতে উদ্যত হয়েছেন। আমি ঘটনাটির পর নিরাপত্তাহীন অবস্থা বোধ করছি। আমার সিনিয়র কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে মামলা করেছি।’

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলমগীর মুন্সী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে কোনো সরকারি কর্মকর্তার খারাপ সম্পর্ক নেই। আমি কেন একজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে অপদস্থ করতে যাব? আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হয়েছে তা বলতে পারব না।’

শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা জানার পর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা চাইছিলাম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি আর যেন সামনের দিকে না আগায়। এখন মামলা হয়েছে।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনী কাজের নথি না দেখানোর কারণে কর্মকর্তাকে ভয় দেখানো, অপদস্থ করা নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ। আমরা বিষয়টি কমিশনকে জানিয়েছি।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের সামনে ঘটেছে। এটা দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছি। ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি।’