এবার মোঈদের আছে ৭০ লাখ টাকার ‘প্রাডো’ গাড়ি

এম এ মোঈদ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ওরফে ফারুকের (আনারস প্রতীক) আগে কোনো গাড়ি ছিল না। এবার তাঁর ৭০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়ি আছে। পেশাও বদলেছে। আগে ছিলেন প্রবাসী, এখন ব্যবসায়ী। নেদারল্যান্ডসপ্রবাসী এম এ মোঈদ ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। আগামী ৮ মে প্রথম দফায় এ উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া এম এ মোঈদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দুটি নির্বাচনের হলফনামায় এম এ মোঈদ শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বশিক্ষিত’ উল্লেখ করেছেন। আগেরবার পেশা ছিল ‘প্রবাসী’। এবার ‘ব্যবসা’ উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে ব্যবসার ধরন উল্লেখ করেননি। পেশা ব্যবসা হলেও এ খাতে তাঁর কোনো আয় নেই। কৃষি খাত থেকে আগে তাঁর বছরে ১৬ হাজার ১২৮ টাকা আয় হতো। এখন সামান্য বেড়ে ২০ হাজার টাকা হয়েছে।

বাড়ি, দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে আগে বছরে ১১ হাজার ৪২৪ টাকা আয় হতো। এবারও একই আছে। ব্যাংক আমানত থেকে আগে বছরে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬ টাকা আয় হতো। এবারও একই টাকা আয় হয় বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া এবার বাড়তি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা থেকে বছরে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্মানী ভাতা থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা পান বলে উল্লেখ করেছেন।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে মোঈদের নগদ টাকা আগে ৪ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা থাকলেও এবার তা কমে দেড় লাখ টাকা হয়েছে। ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ২০ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৬ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৩২ টাকায়। আগের হলফনামায় তাঁর কোনো গাড়ির তথ্য উল্লেখ ছিল না। এবার তাঁর ৭০ লাখ টাকার ‘প্রাডো’ গাড়ি আছে উল্লেখ করেছেন। আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা-মোকদ্দমা ছিল না। এবার ২০২০ সালের করা একটি ফৌজদারি মামলায় আদালত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর কোনো দায়দেনা ও ব্যাংকঋণ নেই।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কিশোর রায় চৌধুরী ওরফে মনি (কাপ-পিরিচ প্রতীক)। তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচনে এম এ মোঈদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি (কিশোর) ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন।

কিশোর রায় চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বশিক্ষিত’। ২০১৯ সালের নির্বাচনের হলফনামায় একটি ফৌজদারি মামলায় তাঁর খালাসের তথ্য ছিল। এবার ওই মামলায় অব্যাহতি প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর আগের ও বর্তমান পেশা ‘ঠিকাদারি’। আগে শুধু কৃষি খাত থেকে তাঁর বছরে আয় হতো ৫০ হাজার টাকা। এবার ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আয় হয় বলে উল্লেখ করেছেন। আগে নিজের নামে নগদ ৪ লাখ টাকা ছিল। এবার শুধু ব্যাংকে নিজের নামে ৩ হাজার ৮৩ টাকা জমা আছে। আগে নিজের নামে ২১ দশমিক ৯৪ একর কৃষি ও ৮ দশমিক ১৪ একর অকৃষিজমি ছিল।

নির্বাচনে এম এ মোঈদ, কিশোর রায় চৌধুরীসহ মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাস (মোটরসাইকেল), যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী কবির উদ্দিন (দোয়াত-কলম), কবিরের ভাই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাসির উদ্দিন (কড়াই) ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন (ঘোড়া)।