গলায় ‘বাল্বের মালা’ ঝুলিয়ে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ

মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ জানাতে সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়কে পদযাত্রা করেন মোহাম্মদ এহছানুল হক

বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক বাল্ব সুতায় বেঁধে মালা আকারে গলায় ঝোলানো। হাতে একটি প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ‘সিলেট মহানগরীতে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে প্রতিবাদে গলায় বাল্বের মালা দিয়ে পদযাত্রা’। নিচে লেখা মোহাম্মদ এহছানুল হক তাহের।

মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ জানাতে সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়কে এভাবেই পদযাত্রা করেছেন মোহাম্মদ এহছানুল হক নামের এক ব্যক্তি। বুধবার বেলা ১১টার দিকে তিনি নগরের সুরমা মোড় এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। তিনি সুরমা মোড় থেকে বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা আম্বরখানা ঘুরে নগরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১–এর কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানেই তিনি দুপুর ১২টার দিকে পদযাত্রাটি শেষ করেন।

তাঁকে সড়কে এমন অবস্থায় দেখে অনেকে কৌতূহলী হন। পাশে গিয়ে অনেকে ছবি তুলেছেন। মোহাম্মদ এহছানুল হক বলেন, তিনি সিলেটের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এ ছাড়া তিনি ২০১০ সালে জাতীয় যুব দিবসে শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক পদক পেয়েছেন। তিনি ২০১৮ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদেও অংশ নিয়েছিলেন।

এহছানুল বলেন, লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি এমন প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছেন। নিজের ইচ্ছাতেই তিনি একক উদ্যোগে এমন প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অনেকে এমন প্রতিবাদকে অভিনব বললেও বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোনো এলাকায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে উপেক্ষা করে বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা দিনের মধ্যে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করছেন। এভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ভ্যাপসা গরমে লোডশেডিংয়ে টিকে থাকা দুঃসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিলেট নগরে প্রায় এক মাস ধরে মাত্রাতিরিক্ত ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। একদিকে প্রচণ্ড গরম আর অন্য দিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। প্রচণ্ড গরমে সাধারণ মানুষ নাজেহাল। এর মধ্যে দিনে ও রাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে সব ধরনের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সকাল, দুপুর, বিকেল এমনকি মধ্যরাতেও হচ্ছে লোডশেডিং। ফলে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে মানুষকে। সিলেটে গড়ে ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের ভয়াবহ অবস্থা থেকে বিদ্যুৎ অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। তা না হলে সিলেটবাসী কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

এর আগেও এহছানুল হক সিলেট নগরে মশকনিধনের দাবিতে একাধিকবার তাঁর সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে মশারি মিছিলের আয়োজন করেছিলেন।

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হলে লোডশেডিং হয়। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে লোডশেডিং হয় না। সিলেটে বুধবার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।