অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করেন মা–বাবা: পুলিশ

ছেলে জনি সরকার (২৫) মাদকাসক্ত। প্রায়ই টাকার জন্য বাড়িতে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। টাকা না দিলে মা–বাবাকে মারধর করতেন। দীর্ঘদিন ধরে ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা করুণা সরকার তাঁর একমাত্র ছেলেকে ঘুমের মধ্যে মাথায় রুটি বানানোর বেলন দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। হত্যার পর ছেলের মরদেহ বস্তাবন্দী করে নালায় ফেলে দেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান।

এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার শিহাচর এলাকায় পয়োনিষ্কাশনের নালা থেকে জনি সরকারের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত জনির বাবা করুণা সরকার বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তিন সন্তানের মধ্যে জনি ছিলেন সবার বড়।

পুলিশ কর্মকর্তা মো. হাসিনুজ্জামান বলেন, পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে ছেলে হত্যায় বাবা করুণা সরকারের সম্পৃক্ততা পায়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বাবার সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই টাকার জন্য বাড়িঘরে ভাঙচুর করতেন। বাবা-মাকেও মারধর করতেন। দীর্ঘদিন ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা ঘুমের মধ্যে মাথায় রুটি তৈরি করার বেলন দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। মা অসিতা রানী সরকার তাঁর স্বামীকে সহায়তা করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, বাবা করুণা সরকারের বাদী হয়ে করা মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে। ছেলেকে হত্যার দায়ে পুলিশ বাদী হয়ে নতুন করে হত্যা মামলা করেছে। পাশাপাশি বাবা করুণা সরকার ও মা অসিতা রানী সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। করুণা সরকার ফতুল্লার শিহাচর এলাকার দুলাল মিয়ার বাড়িতে থাকেন। তিনি ফতুল্লার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিরাপত্তাপ্রহরীর চাকরি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন, উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।