খুলনায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলাকারীদের জামিন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় নারী ফুটবলার ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে জনউদ্যোগের উদ্যোগে মানববন্ধন। আজ খুলনার পিকচার প্যালেস মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

খুলনার বটিয়াঘাটায় নারী ফুটবলারদের ওপর হামলাকারীদের জামিন বাতিলের দাবিতে আজ শুক্রবার খুলনা নগরের পিকচার প্যালেস মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মানববন্ধনের আয়োজন করে জনউদ্যোগ খুলনা নামের একটি সংগঠন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলায় সুনাম অর্জন করছে, তখন দেশের অভ্যন্তরে নারী ফুটবলারদের শুধুমাত্র ফুটবল খেলার জন্য হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এটি খুবই দুঃখজনক। শুধু হামলা করেই তাঁরা থেমে থাকেননি। আসামিরা জামিন পেয়ে নারী ফুটবলারদের মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে অ্যাসিড নিক্ষেপ করার হুমকি দিচ্ছেন। তাঁদের হুমকির কারণে মেয়েরা এখন প্রশিক্ষণে আসতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছে। আতঙ্কে রয়েছে ওই নারী ফুটবলাররা। নারী খেলোয়াড়দের হুমকি দেওয়ায় আসামিদের জামিন বাতিল করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

আরও পড়ুন

বক্তারা আরও বলেন, নারী খেলোয়াড়দের যাঁরা অপদস্থ করছেন, তাঁদের বিচার করতে হবে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিতের পাশাপাশি নারীদের প্রতি বৈষম্য ও বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে হবে। এ জন্য সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণসহ সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ খুলনার নারী সেলের আহ্বায়ক শামীমা সুলতানা। সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব মহেন্দ্রনাথ সেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম, সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় এস এম সোহরাব হোসেন, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর এস এম মাহাবুবুর রহমান, সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য নাসরীন হায়দার, মাসাসের পরিচালক এম এ বাতেন, শিল্পী বিধান চন্দ্র রায়, আইনজীবী কামরুজ্জামান পলাশ, লেখিকা সংঘের মুক্তা জামান প্রমুখ।

আরও পড়ুন

গত ২৯ জুলাই বিকেলে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেঁতুলতলা গ্রামে বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের চার নারী ফুটবলারকে মারধর করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। ওই চার ফুটবলার তেঁতুলতলা গ্রামের সুপার কুইন একাডেমিতে ফুটবল অনুশীলন করে। ওই একাডেমির খেলোয়াড় সাদিয়া নাসরিনের (১৭) খেলার ছবি তুলে তার পরিবারকে দেখিয়ে অপদস্থ করেন স্থানীয় নূপুর খাতুন (২২) নামের একজন। এর প্রতিবাদ করতে নূপুরের বাড়িতে গিয়ে হামলার শিকার হয় চার খেলোয়াড়।

আরও পড়ুন

ওই হামলায় আহত চার নারী ফুটবলার হলো মঙ্গলী বাগচী, সাদিয়া নাসরিন, হাজেরা খাতুন ও জুই মণ্ডল। হামলার জেরে রোববার বিকেলে সাদিয়া বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করে। ওই মামলার চার আসামির মধ্যে নূর আলম নামের একজন কারাগারে। বাকি তিনজন জামিন পেয়েছেন। আসামিরা সাদিয়াকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মামলা তুলে না নেওয়া হলে মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সাদিয়া। ওই হুমকি পাওয়ার পর সাদিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। এসব ঘটনা কেন্দ্র করে খেলোয়াড়, তাদের পরিবার ও একাডেমি কর্তৃপক্ষ উদ্বেগে রয়েছে।

আরও পড়ুন