তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার ভুল সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ১০০ বছর পিছিয়েছে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বিনা মূল্যে সাবমেরিন কেব্লে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। অর্থাৎ আজ যে উচ্চগতির ইন্টারনেট ও সেবা আওয়ামী লীগ সরকার গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিচ্ছে, সেটা আরও ৩০ বছর আগেই করা সম্ভব ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার ভুল সিদ্ধান্তে প্রযুক্তির এই সম্ভাবনা অন্ধকারে চলে গিয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন (ইডিসি) প্রকল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহ্মেদ এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী অদূরদর্শী হলে একটি দেশ ও জাতির কতটা ক্ষতি হয়, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ খালেদা জিয়ার সেই ভুল সিদ্ধান্ত। জ্ঞানের অভাব, শিক্ষার অভাব আর দূরদর্শিতার অভাবেই দেশ পিছিয়েছে ১০০ বছর।
বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে, এ সংকট মোকাবিলার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকেই প্রয়োজন। তাই শেখ হাসিনার বিকল্প চিন্তা কেউ করে না। আওয়ামী লীগ সরকার ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে সবকিছু মোকাবিলা করছে।
সেমিনারে জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ইডিসি প্রকল্পের পরিচালক খন্দকার আজিজুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক।
এর আগে আজ সকালে প্রতিমন্ত্রী উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামে গারো সম্প্রদায়ের ফ্রিল্যান্সার তৃষ্ণা দিও-র সেন্টার পরিদর্শন করেন। এ সময় তৃষ্ণার বাড়িতে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে তাঁকে একটি ল্যাপটপ উপহার দেন। পরে নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদে দেশের প্রথম ‘জয় D-SET CENTER’-এর (জয় ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সাধারণ মানুষ এখান থেকে ২৬টি মন্ত্রণালয়ের সেবা পাবে। এ ছাড়া প্রযুক্তিসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন তরুণ-তরুণীরা।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, ‘১৩ বছর আগে বাংলাদেশ ছিল অন্ধকার, পিছিয়ে পড়া ও দরিদ্র বাংলাদেশ। আর ১৩ বছরের মধ্যে এই বাংলাদেশ এখন শিক্ষার আলোয় আলোকিত, বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত, প্রযুক্তিতে উন্নত দেশ। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক ধাপ এগিয়ে এসেছি। যদি ২০৪১ সাল নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর ভিশন আমরা বাস্তবায়ন চলমান রাখতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ।’
অবসরে বিকল্প পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিতে চান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সবাই তো সারা জীবন এমপি-মন্ত্রী থাকে না। পৃথিবীতে বেঁচেও কেউ থাকে না। সবকিছুরই একটা শেষ আছে। যদি কখনো মন্ত্রিত্ব না থাকে, সংসদ সদস্য না থাকি, তাহলে অবসরে ফ্রিল্যান্সার হব।’