এবার হুইলচেয়ারে বসে নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিলেন মহরম আলী

হুইলচেয়ারে বসে সংবাদ সম্মেলন করেন মহরম আলী। শনিবার দুপুরে নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয়ছবি: প্রথম আলো

এবার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন হুইলচেয়ারে বসে বিশ্ব ভ্রমণ করা নাটোরের প্রতিবন্ধী যুবক মো. মহরম আলী (৩৭)। শনিবার দুপুরে নাটোরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী গোষ্ঠী’ নামের ওই দলের ঘোষণা দেন তিনি।

মহরম আলী নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর-খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণপুর গ্রামের বাসিন্দা। আইনে স্নাতকোত্তর¯মহরম আলী দুই যুগ ধরে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য তহবিল গঠনে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ২০১১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত হুইলচেয়ারে করে তিনি ১৫টি দেশ ঘুরে বেড়ান। তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে হুইলচেয়ারে বসে লিখিত বক্তব্য দেন মহরম আলী। শুরুতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। মহরম আলী বলেন, প্রতিবন্ধীদের অধিকার, নিরাপত্তা, সুরক্ষা, সমন্বিত বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা, পুনর্বাসনসহ সামগ্রিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে এখন রাজনৈতিক দল গঠনের বিকল্প নেই। প্রতিবন্ধীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও ক্ষমতায়িত করার জন্যই রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলতে হচ্ছে।

মহরম আলী বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিশেষ করে বিদ্যমান দলগুলোতে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়ন একেবারেই সম্ভব নয়। এর বড় কারণ, প্রতিবন্ধীরা ক্ষমতার ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারেনি। এখনো বেশির ভাগ প্রতিবন্ধী ও সংগঠন অধিকার আদায়ে রাজনৈতিক পরিচিতি পেতে ভয় পান, একঘরে হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন। এ পরিস্থিতি বদলাতে না পারলে কোটি কোটি প্রতিবন্ধীর জীবনমান বদলাবে না।

মহরম আলী মনে করেন, ‘পিছিয়ে থাকায় পরিচিতিভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রক্রিয়াটি কঠিন। তবু আমরা শুরু করতে চাই, হয়তো আমি একাই শুরু করতে চাই। এই খবর যখন প্রচারিত হতে থাকবে, তখন থেকেই এই রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে বলে মনে করতে হবে।’ তিনি সব প্রতিবন্ধীর অধিকারে সমর্থন আছে, এমন সবাইকে দলের সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানান।

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী গোষ্ঠী’। এর কোনো ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় নাম থাকবে না। সংগঠনটি জাতীয়, বিভাগীয় ও কয়েকটি জেলায় কমিটি গঠনের পর মোর্চা বা ঐক্যগত পদ্ধতি অনুসরণে আগ্রহী হতে পারে। আপাতত সংগঠনটির কার্যক্রম শুধু ইন্টারনেট বা প্রচলিত কাগুজে প্রকাশনায় চলবে। পরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাবে।