বাস ছেড়ে ৩০ কিমি হেঁটে সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মীরা

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গণসমাবেশে যোগ দিতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে আসছেন। আজ রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে
ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশের আগে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এ কারণে বিএনপির নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস ও মাইক্রোবাস নিয়ে ধর্মঘট শুরুর আগেই রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। তাঁরা পথে পথে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একপর্যায়ে বাস ছেড়ে দিয়ে ৩০ কিলোমিটার পথ হেঁটে রাজশাহী এসে পৌঁছেছেন।

রাজশাহীতে আগামী শনিবার অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশের উদ্দেশে রাতে বগুড়া থেকে বাসে রওনা দিয়েছিলেন প্রায় ৫০০ নেতা–কর্মী। তাঁদের রাজশাহীর মোহনুপুর উপজেলার কামারপাড়া এলাকায় পুলিশ বাধা দেয়। তখন রাত দুইটা। এই দলের সঙ্গে ছিলেন বগুড়া শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মর্শেদুল মিঠন। তিনি বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে বগুড়া থেকে আসছিলেন। কামারপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের গাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় একটি গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। তাঁদের এক নেতার মাথা ফেটে যায়। তারপর তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এই নেতা বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কোনো দিন দেখিনি যে, সরকারি দল দেশে হরতাল ডাকে। অবশ্য এ জন্য তারা গর্বিত। বিরোধী দলকে কথা বলতে না দেওয়ার জন্য একটি সমাবেশকে পণ্ড করার জন্য তাঁরা এই কাজ করেছে।’ তবে তাঁরা নিজেরা গর্বিত। কারণ, সেখান থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার হেঁটে সকাল সাড়ে ছয়টার তাঁরা রাজশাহীর পাঠানপাড়া ঈদগাহ মাঠে এসে পৌঁছেছেন বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
সিরাজগঞ্জ থেকে একইভাবে বাস নিয়ে আসছিলেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় এলে পুলিশ তাঁদের বাস ঘুরিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা সেখান থেকেই হাঁটা শুরু করেন। তাঁরা রাত একটার দিকে রাজশাহীর ঈদগাহ মাঠে এসেছেন পৌঁছেন। সেই দলে ছিলেন সিরাগঞ্জের বিএনপি সমর্থক সিরাজুল ইসলাম। তিনি দেখালেন, হাঁটতে হাঁটতে তাঁর পা ফুলে গেছে।

আরও পড়ুন

বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, কিছু গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নেই। এমন গাড়িতে লোক আসছিল। রাতে তাঁদের সার্জেন্ট ছিল না। এ কারণে মামলা দেওয়া যাচ্ছিল না। আবার মামলা দিতে হলে গাড়ির প্রকৃত মালিক ও চালক দরকার। তাঁদেরও পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ধরনের গাড়ি গিয়ে নাশকতা ঘটাতে পারে। এ জন্য বাধ্য হয়ে এ ধরনের গাড়িকে তাঁরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর রাজশাহী মহানগর ও মোহনপুর থানার সীমানায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছিল। যান এড়াতে তাঁরা চার–পাঁচটা গাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আরও পড়ুন

পুঠিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, পুলিশ বানেশ্বরে যে কাজ করেছে, সেটা তাঁদের রুটিন কাজ। গণসমাবেশে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা যাতে না ঘটে সেই জন্য তাঁরা বাসগুলোতে তল্লাশি করেছেন। গাড়ির কাগজপত্র দেখেছেন। কোনো গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। পুলিশ যতটুকু দায়িত্ব পালন করে, ততটুকুই করেছে। কাউকে হয়রানি করা হয়নি।