দুই বছরেও সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি 

আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় দলের মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়, যা গত দুই বছরে প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। 

যশোর জেলার মানচিত্র

আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির ৬ জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় তৃণমূলের অনেকে দলীয় পদ পাচ্ছেন না।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানান যায়, আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় দলের মধ্যে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়, যা গত দুই বছরে প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এর কারণেই সম্মেলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে যশোর জেলা কমিটির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম মোর্তজা এলাহী টিপুকে আহ্বায়ক করে ঝিকরগাছা উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিরা সুলতানা ওই কমিটি মানেননি। তিনি ভোটাভুটির মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আবেদন জানান। এরপর ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় দফায় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে মোর্তজা এলাহীকে আহ্বায়ক করে ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে ছয়জন যুগ্ম আহ্বায়ক হন। সাবিরা সুলতানাসহ অন্যরা কমিটির সদস্য হন। ইতিমধ্যে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দুই বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে কমিটির ছয়জন সদস্য মারা গেছেন। তাঁরা হলেন আবুল কালাম আজাদ, নূরুজ্জামান খান, মশিয়ার রহমান, নাজমুল বাক্কার, আবদুল কাদের ও আবু তালেব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেন, আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় বলা হয়েছিল, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু গত দুই বছরের মধ্যেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। এদিকে নেতাদের অনেকে মারা গেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখা অনেকে নেতা-কর্মী পদের আশায় রয়েছেন।

দুই বছরের মধ্যেও কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা গেল না কেন—জানতে চাইলে বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী বলেন, ‘গত দুই বছরের মধ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে অসংখ্য নাশকতার মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আদালতে হাজিরা দেওয়া ও জামিন আবেদন নিয়ে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে গেলেই থানা-পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়।’ মোর্তজা এলাহী বলেন, ‘উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি, চলতি মে মাসের মধ্যেই কাউন্সিলের মাধ্যমে উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারব।’

দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি পদে দুজন এবং সাধারণ পদে তিনজন প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁরা দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইমরান সামাদ বলেন, ‘আমি বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বে আছি। পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। যুগ্ম সম্পাদক পদের আরও দুজন খোরশেদ আলম ও আশরাফুজ্জামান রনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হবেন বলে শুনছি।’

এদিকে সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিরা সুলতানা প্রার্থী হওয়ার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।