তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই তিনটি ইউনিটে

চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সন্ধ্যার পর রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা শৌচাগারেও যেতে পারেন না।

মোমবাতি জ্বালিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা। গত শুক্রবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডেছবি: প্রথম আলো

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনটি ইউনিট তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সন্ধ্যার পর রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা শৌচাগারেও যেতে পারেন না। পাখা বন্ধ থাকায় বদ্ধ পরিবেশে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা রোগীদের।

হাসপাতালের রঞ্জনবিদ্যা (রেডিওলজি) বিভাগের বিদ্যুৎ–সংযোগ ১৯ দিন ধরে বিচ্ছিন্ন। এ কারণে সব ধরনের এক্স-রে বন্ধ আছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন গরিব রোগীরা। বাইরে থেকে বেশি টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে তাঁদের।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীকে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে অস্থায়ীভাবে অন্য লাইন থেকে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত সেটা করা হয়নি।

সার্জারি ওয়ার্ডের একজন রোগীর স্বজন নাইমুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়ার্ডে আলো না থাকায় আমরা অন্ধকারে শৌচাগারে যেতে পারি না। ফ্যান চলে না এতে গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। মোম জ্বালিয়ে অন্ধকার ভুতুড়ে পরিবেশে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’

সার্জারি ওয়ার্ডের রোগী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অন্ধকারে–গরমে এখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছি। বুধবার রাতেও একইভাবে পার করেছি। ভেবেছিলাম বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ পাব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বৃহস্পতিবারও বিদ্যুৎ পাইনি।’

হাসপাতাল প্রশাসন সূত্র জানায়, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যুৎ–সংযোগ আর মেরামত করা হয়নি। যে কারণে বিভিন্ন স্থানে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না। কেননা বিদ্যুৎ সরবরাহ যেকোনো সময় বিঘ্ন হতে পারে। এ জন্য হাসপাতালের মতো একটি জরুরি সেবাকেন্দ্রে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বড় ও প্রধান হাসপাতালের এই অবস্থা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভগ্নদশাকেই সবার সামনে তুলে ধরছে।