বগুড়ায় ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের তল্লাশি ও বাধা

মিছিল নিয়ে তারুণ্যের সমাবেশে আসেন নেতা-কর্মীরা। সোমবার বেলা দুইটার দিকে বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল এলাকায়
ছবি: সোয়েল রানা

বগুড়ায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের পুলিশ তল্লাশি করেছে ও বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সোমবার জেলার বিভিন্ন স্থানে এ বাধা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে গাড়ি ভাড়া দিতে গাড়ির মালিকেরা অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন নেতা-কর্মীরা।

বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে যোগ দিতে সোনাতলা ও শেরপুর উপজেলার নেতা-কর্মীরা গাড়ি ভাড়া করতে গেলে বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির নেতা আমিনুল ইসলামের চাপে সাধারণ মালিকেরা বাস ভাড়া দিতে অপারগতার কথা জানান। সেই সঙ্গে কয়েকজন মালিক আগাম নেওয়া ভাড়ার টাকা ফেরত দিয়েছেন। এতে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীরা পড়েন বিপাকে।

এদিকে বেলা দুইটা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন থেকে নেতা-কর্মীরা তারুণ্যের সমাবেশে যোগদান শুরু করেন। বেলা তিনটায় সমাবেশ শুরুর পর স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশে যোগ দিয়েছেন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। নেতাদের ভাষ্য, দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও ১৫ বছর ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত ভোটার ও নতুন ভোটাররা তারুণ্যের সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।

বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার বলেন, আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা এবং নওগাঁ ও জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী মোটরসাইকেলে করে ও গাড়িবহর নিয়ে সমাবেশস্থলে আসার পথে দুপচাঁচিয়া থানা-পুলিশ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তাঁদের আটকে দেয়। দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ নিজেই গাড়িবহর আটকে দেওয়ার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পুলিশের বাধার মুখে পড়ে সমাবেশে যোগ দিতে আসা গাড়িবহরে থাকা বহু নেতা আটকা পড়েছেন। একই চিত্র বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলাতেও। নেতা-কর্মীরা বিকল্প পথে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন।

দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই করার জন্য চেকপোস্ট বসানো হয়। বগুড়ায় একটি রাজনৈতিক দলের তারুণ্যের সমাবেশে যোগ দিতে আসা গাড়িবহরে থাকা যেসব যানবাহনের কাগজপত্র ত্রুটি ছিল, সেসব গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। যেসব গাড়ির কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে, সেসব গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের ১৬ জেলার ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজনের জন্য প্রথমে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। একই দিন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বগুড়া জেলা যুবলীগ শহরের সাতমাথায় পাল্টা ‘শান্তি সমাবেশ’ আয়োজনের ঘোষণা দিলে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারুণ্যের সমাবেশ সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে আয়োজনের অনুমতি দেয় প্রশাসন। কিন্তু সেখানে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলার কারণে নেতা-কর্মীরা বেলা দুইটার আগপর্যন্ত মাঠে প্রবেশ করতে পারেননি।