ডাকাতেরা কোপাল শিক্ষক ও তাঁর স্বামীকে, রড দিয়ে মাথা ফাটাল কিশোরী মেয়ের

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে শিক্ষকেরা বাড়িতে ডাকাতির সময় তিনজনকে কুপিয়ে ও রড দিয়ে আঘাত করে আহত করা হয়েছে। তছনছ করা হয়েছে ঘরের আসবাবপত্র
ছবি: সংগৃহীত

ঘরের ভেতরে মেঝেতে লেপটে আছে রক্ত। ঘরজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে ভাঙা আসবাবপত্র, কাপড়চোপড়। ডাকাতি করতে এসে মাত্র ২০ মিনিটে এমন তাণ্ডব চালিয়েছে ডাকাতের দল।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া বাজার এলাকায় এক শিক্ষকের বাড়িতে আজ রোববার ভোররাতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে আঘাত করে আহত করেছেন ওই শিক্ষক, তাঁর স্বামী ও সন্তানকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর অবস্থা গুরুতর।

আহত ওই শিক্ষকের নাম মাইমুনা খানম। তিনি সন্দ্বীপ পাবলিক স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তাঁর স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান গুপ্তছড়া বাজারের ব্যবসায়ী। তাঁদের দুজনকে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে। তাঁদের বড় মেয়ে তাসফিয়া রহমান ওরফে নুহান স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে। ডাকাতদের হাতে থাকা রডের আঘাতে তাসফিয়ার মাথা ফেটে গেছে।

আহত মাইমুনা খানমের ছোট ভাই সাজেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বোনের বাড়ি গ্রামের অন্য বাড়িগুলো থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন এলাকায়। আজ ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে পাঁচ থেকে ছয়জন ডাকাতের একটি দল মুখোশ পরে ওই বাড়িতে আসে। তারা প্রথমে ঘরে প্রবেশের কলাপসিবল গেটের চারটি তালা ভাঙে। তালা ভাঙার আওয়াজ শুনে তাঁর দুলাভাই মোস্তাফিজুর রহমান দরজার সামনে আসতেই তাঁকে ঘিরে ফেলে ডাকাতেরা। এরপর আলমারির চাবিসহ টাকাপয়সা দিতে তাঁর দুলাভাইকে চাপ দেয়। এগুলো দিতে দেরি হাওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোস্তাফিজুরকে আঘাত করে ডাকাতেরা। তাঁকে রক্ষায় মাইমুনা খানম এগিয়ে এলে তাঁকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ডাকাতেরা। পরে হাতে থাকা রড দিয়ে তাঁদের মেয়ে তাসপিয়ার মাথায় আঘাত করে।

সাজেদুল করিম আরও বলেন, তিনজনকে আঘাত করে ঘরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ডাকাতেরা। এরপর বাকি সময়ে তারা ঘরে তাণ্ডব চালায়। ডাকাতদের আঘাতে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন তাঁর দুলাভাই মোস্তাফিজুর রহমান ও মাইমুনা খানম। ঘরের মেঝে তাঁদের রক্তে লেপটে যায়। ভোরের আলো ফোটার আগেই ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। এরপর তাঁর শিশু ভাগ্নিসহ আহত ব্যক্তিরা চিৎকার করতে থাকলে মসজিদে আসা মুসল্লিরা তাঁদের উদ্ধার করেন। তাঁদের প্রথমে স্বর্ণদ্বীপ হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এই ঘটনাস্থলের কিছু দূরে আরেকটি একটি বাড়িতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। দুটি বাড়িতে ডাকাতির খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ডাকাতেরা ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ডাকাতদের ধরতে অভিযানে আছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় একটি ডাকাতির মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি।