যুবদল নেতার গ্রেপ্তারের খবরে শুনে বাবার মৃত্যু, দাবি পরিবারের
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে—এমন খবর শুনে তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ সোমবার প্যারোলে মুক্তির জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। তবে দুপুর পর্যন্ত তাঁর মুক্তি মেলেনি। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবদুল আউয়াল খান। তিনি ধলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন।
আবদুল আউয়ালের ছোট ছেলে আরিফ হাসান খান বলেন, গত শনিবার সন্ধ্যায় ভালুকা সরকারি কলেজের সামনে থেকে তাঁর বড় ভাই রকিবুল হাসান খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রকিবুল ভালুকা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। রকিবুলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পেরে মা বাসায় কান্নাকাটি শুরু করেন। এর আগেও রকিবুল একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের মা এতটা ভেঙে পড়েননি। বিষয়টি তাঁর বাবাকে প্রথমে জানানো হয়নি।
আরিফ বলেন, পরের দিন অন্য মাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনে ফেলেন তাঁর বাবা। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ময়মনসিংহের সিবিএমসিবি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক পরীক্ষার পর জানতে পারেন আবদুল আউয়াল স্ট্রোক করেছেন। এর আগেও তিনি একবার স্ট্রোক করেছিলেন। এরপর সন্ধ্যায় তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। আজ জোহরের নামাজ শেষে ভালুকা সরকারি কলেজের মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা হবে। আর আসর নামাজের শেষে ধলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দলের একাধিক নেতার সঙ্গে যুবদলের নেতা রকিবুল হাসান গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ৫১ দিন কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর গত শনিবার সন্ধ্যায় আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো।
থানা-পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ভালুকা-পারুলদিয়া সড়কের পনাশাইল এলাকায় সড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুর করছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা পুলিশকে বাধা দেন। তখন ঘটনাস্থল থেকে যুবদলের নেতা রকিবুল হাসান খান ও আতাহার আলীকে আটক করে পুলিশ। পরে আটক দুজনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ এবং ১৭৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গতকাল ভালুকা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম মামলা করেন।
তবে পুলিশের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ভালুকা উপজেলা বিএনপি ও রকিবুলের পরিবার। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন বলেন, রাতে তাঁদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। দিনের বেলা শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা কর্মসূচি করেন বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা। উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে আটক করে মিথ্যা ঘটনা সাজানো হয়েছে।