চকরিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, ৫ জন কারাগারে

পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে চকরিয়া থানায়ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন মামলার আসামি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নবী হোছাইনকে ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হয়েছেন সাদরুল আমিন (৩৫) নামের পুলিশের এক কনস্টেবল।

হামলার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

কারাগারে পাঠানো পাঁচজন হলেন সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার মো. আরমান হোসেন (১৯), তাঁর ভাই মোস্তফা কামাল (২৫), সাহারবিলের শাহপুরা এলাকার জয়নাল উদ্দিন (৪২), চকরিয়া পৌরসভার সালাম মাস্টারপাড়া এলাকার আমির হোসেন (৪৫) ও বিএমচর ইউনিয়নের পাহাড়িয়াপাড়া এলাকার নুরশেদুল ইসলাম ওরফে ছোটন (২০)।

পুলিশের ভাষ্য, সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে গরু ও মহিষ চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র এবং মারামারির অভিযোগে অন্তত এক ডজন মামলা আছে। কয়েক দিন আগে এসব মামলার মধ্যে দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চকরিয়া থানায় আসে। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, নবী হোছাইন জনপ্রতিনিধি হলেও তিনি আন্তজেলা চোর চক্রের প্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে চকরিয়া, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় গরু চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত এক ডজন মামলা আছে। এসব মামলার মধ্যে পুলিশের হাতে কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। মামলার আসামি ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে গিয়ে পুলিশ হামলার শিকার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের কোরালখালী এলাকার বসতঘরে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। তখন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সংঘবদ্ধ লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন এবং পুলিশকে বসতঘরে ঢুকতে না দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রকিব উর রাজা ও চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী আরও পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বসতঘর চারপাশ থেকে ঘিরে অভিযান শুরু করে পুলিশ। রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালালেও ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে পারেনি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজনের হামলায় এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। পুলিশের কাজে বাধা ও হামলায় জড়িত পাঁচজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আটক পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।