অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও বগুড়ায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ
বিএনপির ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আজ বুধবার সকালে প্রায় এক ঘণ্টা বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেট আন্ডারপাসের নিচে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে মুহুর্মুহু শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল ছোড়েন বিএনপির কর্মীরা।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, জনগণের নিরাপত্তায় পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করেছে। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোর থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়ার বনানী মোড়, মাটিডালি মোড়, নওদাপাড়া, বাঘোপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে লাঠিসোঁটা হাতে অবস্থান নেন। এ সময় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরা।
অবরোধকারীদের বাধার মুখে সকাল থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিনমাথা রেলগেট আন্ডারপাসের কাছে যানবাহন চলাচল সচল করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ বাঁধে।
অবরোধের সমর্থনে আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহরের মাটিডালি বিমান মোড়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বের হওয়া মিছিলে ৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে জবাব দেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে পুলিশ বা বিএনপি নেতা-কর্মীরা কেউ হতাহত হননি।
আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দুই পাশে সব ধরনের যানবাহনের চলাচল বন্ধ ছিল। ঠনঠনিয়া টার্মিনাল ও চারমাথা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। অন্য কোনো গন্তব্য থেকেও বাস ছেড়ে আসেনি। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও ওষুধ পরিবহনকারী যানবাহন চলছে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে জনগণ সর্বাত্মক কঠোর অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা মহাসড়কে শান্তিপূর্ণ অবরোধ পালন করলেও পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে।
অবরোধ সমর্থকদের মোকাবিলায় বগুড়া শহরতলির বনানী ও মাটিডালি মোড়ে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ সকাল থেকে এ দুটি স্থানে ক্ষমতাসীন দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থান করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এখানে অবস্থান নিয়েছি। কেউ বাধা দিলে আমরাও প্রতিহত করব।’