তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের সঙ্গে ওই আসামিরা
ছবি: প্রথম আলো

রেললাইনে নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ গ্রেপ্তার সাত আসামির মধ্যে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের রোববার বিকেলে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে ওই তিনজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান।

ওই তিনজন হলেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার বারইবাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে জান্নাতুল ইসলাম (২৩), ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বান্দীয়া মেদুয়ারি এলাকার তাইজুদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) ও গাজীপুরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকার সোলাইমান মোড়লের ছেলে শাহানুর আলম (৫৩)।

গ্রেপ্তার অন্য চারজন হলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হাসান আজমল ভূঁইয়া (৫০), জুলকার নাইন আশরাফি ওরফে হৃদয় (৩৫), মো. সাইদুল ইসলাম (৩২) ও সোহেল রানা (৩৮)। এর মধ্যে আজমল ভূঁইয়া গাজীপুর সদর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গত সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাঁকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের বনখরিয়া এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরে যাচ্ছিল। গত মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ও ভাওয়াল রেলস্টেশনের মাঝামাঝি রেলপথের একটি অংশ কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে ১ যাত্রী নিহত ও অন্তত ১২ জন আহত হন।
গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে তাঁরা আসামিদের আদালতে পাঠান।

এর আগে রোববার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেছেন, দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের চাপ ও দেশে–বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করতে রেললাইনে নাশকতার পরিকল্পনা হয় আজমল ভূঁইয়ার বাড়িতে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আটজন মিলে রেললাইনের কিছু অংশ কেটে রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান, রেলওয়ে পুলিশের এসপি মো. আনোয়ার হোসেনসহ জেলা ও মহানগর পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।