ট্রেতে বোরো ধানের চারা তৈরি 

উপজেলার ধানশাইল গ্রামের মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হবে।

ঝিনাইগাতীতে আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করার জন্য ট্রে পদ্ধতিতে তৈরি করা হাইব্রিড বোরো ধানের চারা পরিদর্শন করছেন কর্মকর্তারা। গত সোমবার ধানশাইল গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে প্রথমবারের মতো আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষের জন্য ট্রে পদ্ধতিতে (প্লাস্টিকের ফ্রেম) হাইব্রিড ধানের চারা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। উপজেলার ধানশাইল গ্রামের মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে ৫০ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হবে। এ পদ্ধতি অবলম্বনে কৃষকেরা লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আধুনিক কৃষি যন্ত্রগুলো অল্প সময়ে অনেক বেশি কাজ করে। এগুলো পরিচালনার জন্য জনবল লাগে কম। কিন্তু যান্ত্রিকীকরণের জন্য দরকার যৌথ খামার বা সমবায় কৃষিব্যবস্থা। একটি এলাকার কোনো একটি কৃষিপণ্য চাষের পুরো প্রক্রিয়াকে যদি একই পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা যায়, তাহলে জমির আল বজায় রেখেও লাভজনকভাবে যন্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব। বোরো ধান চাষে এ রকমের একটা কার্যকরী উপায় বের করেছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন তাঁরা ‘সমলয়’। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নতুন এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে ফসল কাটা, সবই একযোগে করা হবে। স্বল্প মানুষের সাহায্যে কাজ করবে যন্ত্র। জমির অপচয় রোধে এ পদ্ধতিতে প্রচলিত রীতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে লাগানো হয় ধানের বীজ। ২০–২৫ দিনের মধ্যে চারা হবে। তারপর রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হবে। একটা ট্রান্সপ্ল্যান্টার এক ঘণ্টায় এক একর জমিতে চারা লাগাতে পারে, বেঁচে যায় সাড়ে চার হাজার টাকা।  

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হবে। এর মধ্যে উপজেলার ধানশাইল গ্রামের মাঠে সমলয় পদ্ধতিতে ৬০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হবে। এতে ওই এলাকার মাঠে ৪ হাজার ৫০০টি ট্রেতে ৩০০ কেজি বীজ বপন করে চারা তৈরি করা হয়। ট্রেতে তৈরি বীজতলা থেকে উৎপন্ন চারা যন্ত্রের মাধ্যমে খেতে রোপণ করা হবে। পরে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা হবে। এ পদ্ধতিতে চাষিরা কম খরচে তাঁদের ধান ঘরে তুলতে পারবেন।

সমলয় পদ্ধতির উপকারভোগী ধানশাইল গ্রামের কৃষক আবুল ও জাকিনুর বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে শ্রমিকের মজুরি কম লাগবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমে যাবে

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, কৃষিশ্রমিকের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষিতে শ্রমিকের মজুরি ও ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই ধানের উৎপাদন খরচ কমাতে এবং সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চাষ বিস্তারের জন্য প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ঝিনাইগাতীতে প্রথমবারের মতো ধান চাষ করা হবে।