স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয় তরুণকে ডেকে এনে খুন: পিবিআই

নিহত ইমতিয়াজ (২২)ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে ১২ জুলাই ইমতিয়াজ (২২) নামের এক তরুণের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পিবিআইয়ের ভাষ্য, বরিশালের এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ইমতিয়াজের। একপর্যায়ে ইমতিয়াজ তাঁর মেয়ের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়ান। এসব বিষয় জানতে পেরে তাঁকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় ওই ব্যক্তির ছেলে ও মামা তাঁকে সহায়তা করেন।

আজ নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য তুলে ধরেন পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

১২ জুলাই তিতাসের জিয়ারকান্দি গুলবাগ এলাকায় হোমনা-গৌরীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে ওই তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ইমতিয়াজ বরিশালের কাজীরহাট থানার রতনপুর (চিলমারি) গ্রামের মো. দুলাল হাওলাদারের ছেলে। এ ঘটনায় ১৩ জুলাই তিতাস থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন তাঁর বাবা।

এ ঘটনায় বরিশালের কাজীরহাটের ওই ব্যক্তি, তাঁর ছেলে ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর মামলা হলে ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মেরুন রঙের একটি পুরোনো নোয়া গাড়ি এবং গাড়ির ভেতরে চালকের আসনের পাশের ড্রয়ার থেকে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আসামিরা কুমিল্লার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালতে আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে পুলিশ সুপার বলেন, প্রধান আসামি ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা বরিশালে থাকেন। ইমতিয়াজ কয়েক বছর আগে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে এবং পরে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। তখন তিনি তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সর্বশেষ ১০ জুলাই ইমতিয়াজকে কৌশলে ঢাকায় ডেকে এনে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কুমিল্লার তিতাসে নিয়ে হত্যা করেন।

তবে সংবাদ সম্মেলনের সময় পিবিআই কুমিল্লা কার্যালয়ে থাকা ইমতিয়াজের বাবা মো. দুলাল হাওলাদার দাবি করেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর কোনো অবৈধ সম্পর্ক ছিল না। তবে তাঁর ছেলে ওই ব্যক্তির মেয়েকে ভালোবাসতেন। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান।