সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া
পানিনিষ্কাশনের পথ বন্ধ, কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতা
ইউপি চেয়ারম্যান পানিনিষ্কাশনের একমাত্র জলাধারের মুখটি বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামের শতাধিক কৃষকের জমিতে তিন মাস ধরে পানি জমে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের প্রায় ৬০০ বিঘা জমি। কৃষকদের অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম এসব জমির পানিনিষ্কাশনের একমাত্র জলাধারের মুখ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করেছেন। তাই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের পুকুরপাড় ও ভেটুয়াকান্দি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিনটি মাঠে পানি জমে আছে। এসব জমিতে রোপণ করা ধান পানিতে ডুবে থাকতে থাকতে পচে গেছে। পুকুরপাড় গ্রামের সাইফুল ইসলামের পাঁচ বিঘা জমিতে রোপণ করেছিলেন আমন। জলাবদ্ধতায় পুরো ধানই পচে গেছে। শর্ষের আবাদ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়।
কৃষকেরা বলেন, পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নে সারা বছরই ধান, পাট, গম, শর্ষে ও শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদিত হয়। এ ইউনিয়নের পুকুরপাড় ও পূর্ণিমাগাঁতী মৌজার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে রোপা আমনের পর শীতকালীন সবজি ও শর্ষে উৎপাদন করেন কৃষকেরা। সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ২০২২-২৩ অর্থবছরের কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ছয়বাড়িয়া গ্রামের কোল ঘেঁষে প্রবাহিত জলাধারের মুখ বন্ধ করে মাটির রাস্তা নির্মাণ করেছেন। অপরিকল্পিত ওই রাস্তা নির্মাণে দুটি মৌজার চারটি গ্রামের প্রায় ৬০০ বিঘা ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকেরা ইউপি চেয়ারম্যানকে নিষেধ করলেও তা কর্ণপাত করেননি তিনি। পরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে পানিনিষ্কাশনের জন্য সরু পাইপ বসানো হয়। এতেও কোনো কাজ হয়নি।
কৃষকদের অভিযোগ, যে ছয়বাড়িয়া গ্রামের জন্য এই কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, সেই গ্রামে বিকল্প রাস্তা আগে থেকেই ছিল। তারপরও কেন জলাধারের মুখ বন্ধ করে রাস্তা করা হলো? এ জলাধার দিয়ে তিনটি মাঠের পানি নিষ্কাশিত হয়ে বারখাদি নদীতে যেত।
এ বিষয়ে পূর্ণিমাগাঁতী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, বৃষ্টির কারণে কৃষকদের ফসলের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে রাস্তাটি তৈরির কারণে কারও ফসলের ক্ষতি হয়নি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমীন জানান, জলাধারের মুখ বন্ধ করায় উপজেলার ওই অঞ্চলের বিশাল একটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।