অ্যাসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে নারী শ্রমিক হত্যার দায়ে সহকর্মীর মৃত্যুদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং অ্যাসিড গায়ে ঢেলে ট্যানারি শ্রমিক এক নারীকে হত্যার দায়ে তাঁর সহকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম শামীম হাসান (৩৮)। তিনি যশোরের অভয়নগর উপজেলার জাফরপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিহত ওই নারী অভয়নগর উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, অভয়নগর উপজেলার তালতলা এলাকায় অবস্থিত এস এ এফ ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি চামড়ার কারখানায় শামীম হাসান এবং ওই নারী দীর্ঘদিন শ্রমিকের কাজ করেন। দুজনের আগে অন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। পরে দুজনেরই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এক সঙ্গে কাজ করার সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর দুপুরে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির সময় শামীম হাসান তাঁর সহকর্মী ওই নারীকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু ওই নারী বিয়ে করতে রাজি হননি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে শামীম লোহার রড দিয়ে ওই নারীর মাথায় আঘাত করেন। এর পর তিনি কারখানার কাজের জন্য বালতিতে রাখা অ্যাসিড তাঁর গায়ে ঢেলে দেন। অ্যাসিডে ওই নারীর শরীর ঝলসে যায়। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ওই নারীর মামা বাদী হয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শামীমকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার তদন্ত শেষে শামীম হাসানকে অভিযুক্ত করে ২০২২ সালের ১১ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে আদালত এই রায় দেন।

আদালতের সকরারি কৌঁসুলি (পিপি) এম ইদ্রিস আলী বলেন, দীর্ঘসাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি শামীম হাসানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাঁকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত শামীম আগেই গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তাঁকে আদালতে আনা হয়। রায় ঘোষণার পর তাঁকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।