বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা বাবর আলীকে উঠানে নিয়ে কুপিয়ে মারল দুর্বৃত্তরা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় বাবর আলী (৪৫) নামের এক ফল ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একদল দুর্বৃত্ত গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা বাবর আলীকে বাড়ির উঠানে নিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দুইটায় তিনি মারা যান।

নিহত বাবর আলী উপজেলার দর্শনা থানাধীন কুড়ালগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। এদিকে খুনের ঘটনা জানতে পেরে দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকিয়া সুলতানা ও দর্শনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম আমানুল্লাহ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আজ শুক্রবার সকালে এ খবর লেখার সময় নিহতের মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা ছিল।

নিহত বাবর আলীর স্ত্রী মহিমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজন লোক বাড়িতে এসে তাঁর স্বামীকে খোঁজ করেন। বাড়িতে না থাকায় তাঁর মুঠোফোন নম্বর চান। কিন্তু মহিমা খাতুনের মুঠোফোন নম্বর মনে না থাকায় তিনি দিতে পারেননি। রাতে মহিমা খাতুন দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরের ভেতরে এবং বাবর আলী বারান্দায় শুয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সন্ধ্যায় খুঁজতে আসা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বাড়িতে ঢোকেন এবং ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা বাবর আলীকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ির উঠানে নামিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারেন। স্বামীর ওপর হামলার সময় মহিমা চিৎকার দিলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যান। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় বাবরকে উদ্ধার করে মাইক্রোবাসে করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মহিমা বলেন, তাঁর স্বামী পেশায় মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী ছিলেন। মাসখানেক ধরে তিনি লিচুর ব্যবসা করছিলেন। লিচুর বাগান কেনার চার লাখ টাকা নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এ হামলার পেছনে তাঁদের হাত আছে কি না, সেটা দেখা দরকার।

সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) এহসানুল হক বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে একটি মাত্র কোপের আঘাত দেখা গেছে। ওই কোপের কারণে রক্তনালি কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান বাবর আলী।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক বলেন, বাড়িটি বেশ সুরক্ষিত। ভেতরে কাউকে ঢুকতে হলে দরজা ভাঙতে হবে। তারপরও দুর্বৃত্তরা কীভাবে ঢুকলেন এবং কুপিয়ে বেরিয়ে গেলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।