সেন্ট মার্টিনের ওপারে এবার দিনে মর্টার শেল বিস্ফোরণ, আতঙ্কে বাসিন্দারা

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের দক্ষিণের গ্রাম হাস্যুরাতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ৪০টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ হয়েছে। এর আগে গত ১০-১২ দিন ধরে রাতের বেলায় উত্তরের কয়েকটি গ্রামে মর্টার শেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণ ঘটে আসছিল।

আজ সকাল থেকে হাস্যুরাতে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের কারণে কেঁপে ওঠে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন এলাকা। এ সময় সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিকেল পর্যন্ত ৪০টির বেশি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের কারণে দ্বীপে প্রবল কম্পন দেখা দেয়, যা ভূমিকম্পের সময়েও হয় না। এ সময় আতঙ্কে দ্বীপের মানুষেরা ছুটাছুটি শুরু করেন।

আক্তার কামাল আরও বলেন, তিনি জেনেছেন হাস্যুরাতে আরাকান আর্মির অবস্থানে সরকারি বাহিনী হামলা শুরু করেছে। বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমারের জলসীমানায় সে দেশের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজও অবস্থান নিয়েছে। সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাটে দাঁড়িয়ে হাস্যুরাতের দৃশ্য খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে।

নূর মোহাম্মদ নামের দ্বীপের এক বাসিন্দা বলেন, শুক্রবার দুপুরে সবচেয়ে বেশি মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল সেন্ট মার্টিন দ্বীপেই মর্টার শেল এসে পড়েছে।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে মংডু টাউনশিপের উত্তরের নাকপুরা, বলিবাজার, পেরাংপ্রু, কাওয়ারবিলসহ কয়েকটি গ্রামে রাতের বেলা মর্টার শেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণ ঘটে আসছিল। গত দুই দিন সংঘাত মংডুর দক্ষিণের কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ দিনের বেলা সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় আকাশ থেকে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারে মর্টার শেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, শুক্রবার সকালে শাহপরীর দ্বীপের বিপরীতে নাফ নদীর মিয়ানমার জলসীমায় একটি বড় জাহাজের অবস্থান দেখা গেছে। দুপুরের আগেই জাহাজটি সেখান থেকে দক্ষিণে সরে গিয়ে সেন্ট মার্টিনের বিপরীতে অবস্থান নেয়। তিনি আরও বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।