রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের ভেতরে প্রক্টর দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ক্যাম্পাসে কর্মরত তিনটি সাংবাদিক সংগঠন।

হেনস্তার শিকার সাংবাদিকের নাম সোহাগ আলী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোর-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তবে এ ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দরপত্র ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন উপলক্ষে কয়েকটি ভবনের রং করার কাজ পেয়েছে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ কোম্পানি। এ ঘটনায় স্থানীয় ঠিকাদারেরা এক জোট হয়ে চলমান রং করার কাজ বন্ধ করে দেন। এ–সংক্রান্ত আলোচনার জন্য প্রক্টরের দপ্তরে গিয়েছিলেন স্থানীয় ঠিকাদারেরা। এ সময় ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে সাংবাদিক সোহাগ হেনস্তার শিকার হন।

স্মারকলিপি ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সোহাগ আলী একটি কাজে প্রক্টরের দপ্তরে গেলে সেখানে ১৫–২০ জনকে দেখতে পান। এ সময় তাঁদের কয়েকজন প্রক্টর মাহবুবর রহমানের সঙ্গে উচ্চ স্বরে বাক্যবিনিময় ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করছিলেন। এ পরিস্থিতির ভিডিও ধারণ শুরু করলে উপস্থিত এক ব্যক্তি তাঁকে ভিডিও বন্ধ করতে বলেন এবং আকস্মিক তাঁর হাতে থাকা মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। এরপর আরও কয়েকজন তাঁকে টেনেহিঁচড়ে দপ্তরের বাইরে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রক্টরের নির্দেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক সহকারী প্রক্টর গিয়ে সোহাগ আলীকে উদ্ধার করেন।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলজাবের আহমেদ বলেন, ‘ক্যাম্পাস সাংবাদিকেরা সব সময় সত্য প্রকাশে কাজ করেন। বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি সবার সামনে তুলে ধরেন। যাঁরা এমন বিমাতাসূলভ আচরণ করেছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাবর্তন উপলক্ষে রংয়ের গুণগত মানের কথা চিন্তা করে বার্জার পেইন্টস কোম্পানিকে কাজ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে স্থানীয় ঠিকাদারেরা এ খবর জানতে পেরে কাজ বন্ধ করে দেন। এই কাজ তাঁদেরকে দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। এ সময় কয়েকজন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। একপর্যায়ে এক সাংবাদিককে হেনস্তা করেন।’

প্রক্টর আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় কাজ শুরু করলে আবারও বন্ধ করে দেন তাঁরা (স্থানীয় ঠিকাদারেরা)। হেনস্তার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদেরকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের ঠিকাদারি লাইসেন্স বাতিল করা হবে। তাঁরা স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’