ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে তীব্র যানজট, ভোগান্তি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে চান্দিনা উপজেলার বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ৩১ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে চান্দিনার নূরতলা এলাকায় দুর্ঘটনার পর যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। এরপর দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার দিকে মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। এর আগে সকাল আটটা থেকে যানবাহন চলাচল প্রায় থমকে যায়।
গতকাল রাত দুইটায় চান্দিনার নূরতলা এলাকায় চট্টগ্রামগামী একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে আড়াআড়ি হয়ে যায়। এতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে কুমিল্লা অংশে প্রায় ৩১ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানা-পুলিশ রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি সরিয়ে নিলে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। তবে যান চলাচল শুরুর পর কিছু চালক উল্টো পথে গাড়ি চালাতে থাকেন। এতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী লেনে যানবাহন চলাচল আটকে থাকে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা দিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার মানুষ ঢাকায় যাওয়া-আসা করেন। একসঙ্গে অসংখ্য যানবাহন পারাপারের কারণে টোল প্লাজায় যানবাহন পারাপারে ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। সেখানেও যানজট তৈরি হয়। বেলা ১১টায় মহাসড়কের দাউদকান্দির স্বল্পপেন্নাই এলাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী প্রাইভেট কারের চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভোর পাঁচটায় স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দিই। ঢাকার শনির আখড়ার পর থেকেই যানজটে পড়ি। দাউদকান্দি অংশে পৌঁছে পুরোপুরি যানজটে আটকা পড়ি। গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এক ঘণ্টার পথ ছয় ঘণ্টায় অতিক্রম করতে হয়েছে।’
কুমিল্লার হোমনা সদরে যাবেন হাসিনা আক্তার। দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকায় হাঁটতে হাঁটতে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ছেলের বউ তানিয়া আক্তার, তিন বছরের নাতনি ফাতেমা আক্তার, চার বছরের নাতনি মরিয়ম আক্তারকে নিয়ে ঢাকা থেকে ভোর পাঁচটায় রওনা দিয়েছেন। যানজটে বাসে দীর্ঘ সময় বসেছিলেন। এখন মালামাল মাথায় নিয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। প্রচণ্ড গরমে অনেক কষ্ট হয়েছে।
ঢাকা থেকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জগামী কাভার্ড ভ্যানের চালক লিটন মিয়া বলেন, ভোররাত চারটায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে পথে পথে যানজটে আটকা পড়েন। এক ঘণ্টার পথ সাত ঘণ্টায়ও অতিক্রম করতে পারছেন না। যানবাহনের কিছু চালক ঘুমিয়ে পড়ায় এবং উল্টো পথে যানবাহন চলাচলের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
ঢাকাগামী ট্রাকের চালক মমিন মিয়া মহাসড়কের দাউদকান্দির আমিরাবাদে বলেন, ২০ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রম করতে তাঁর তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, রাতে সড়ক দুর্ঘটনা, উল্টো পথে যান চলাচল, অধিকাংশ চালক গাড়িতে ঘুমিয়া পড়ার কারণে যানজট তীব্রতর হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।