আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে খাল ভরাটের অভিযোগ

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় শত বছরের প্রাচীন রামনগর খালে বালু ফেলে চলছে দখল ও ভরাট
ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ওরফে মন্টুর বিরুদ্ধে বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে প্রাচীন ‘রামনগর খাল’ ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।

খাল ভরাট করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেওয়ায় বর্ষাকালে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন এলাকার কৃষকেরা। এ ছাড়া পরিবেশ বিপর্যয় ও খালের ওপর সরকারি অর্থে নির্মিত সেতু জনসাধারণের কাজে না আসার শঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

তবে খাল ভরাটের কথা স্বীকার করে রেজাউল করিম দাবি করেন, যে খাল তিনি বালু দিয়ে ভরাট করছেন, সেই খালের জায়গা তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। নিজের মালিকানা ছাড়াও চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে কবলা করেছেন। এ ছাড়া খালের উজানের দিকে আগেই সাত থেকে আটটি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ হয়ে আসছে। রামনগর খাল ভরাট হলেও পানি নিষ্কাশনের সমস্যা হবে না।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার নারচী ইউনিয়নের ফেরিঘাটের দক্ষিণে বাঙ্গালী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে খালটি এঁকেবেঁকে ভাটিতে ফুলবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের সুখদহ নদে মিশেছে। নারচী ইউনিয়নের সাহাপাড়া এবং ফুলবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবহমান এ খালের দুই ধারে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে।

শত বছরের পুরোনো এই খাল দিয়ে কয়েক হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশিত হয়। অতি সম্প্রতি খাল দখলের মহোৎসব শুরু হয়। খালের ১৬টি অংশে বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষাবাদ। এতে বর্ষাকালে ফুলবাড়ী, নারচী ও সদর ইউনিয়নের অন্তত পাঁচ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। খালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ গড়ে ৫০ মিটার। এ খালের ওপর বগুড়া-সারিয়াকান্দি সড়কে কোটি টাকা ব্যয়ে রামনগর সেতু ও গরুমারা সেতু নির্মিত হয়েছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কিছুদিন ধরে প্রাচীন এ খাল ভরাটের মহোৎসব চলছে। ইতিমধ্যে খালের কয়েকটি জায়গায় পানির প্রবাহ বন্ধ করে বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে। এক মাস ধরে এই খাল দখল করে ভরাট করছেন রেজাউল করিম।

হাটফুলবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের কৃষক রানা মিয়া বলেন, প্রাচীন এ খাল ভরাট করায় অন্তত পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাবে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হবে।

হাটফুলবাড়ীর কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে এ খাল দিয়ে হাজার হাজার হেক্টর জমির পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। এ খাল ভরাট হলে বর্ষাকালে ফসলের ক্ষতি হবে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা ধুনটের ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, সরকারি খাল ভরাট করা বেআইনি। কাগজপত্র দেখে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।