সিলেট নগরে যান চলাচল বাড়লেও বন্ধ দূরপাল্লার বাস, অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ
বিএনপির তৃতীয় দফায় ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সিলেটের কয়েকটি সড়কে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। অবরোধে শহরের অভ্যন্তরের যান চলাচল প্রথম দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটারসাইকেল, লেগুনা ও পিকআপের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহনও চলাচল করতে দেখা গেছে, তবে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে তেমন যানবাহন দেখা যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি, তবে ছোট ছোট পরিবহনে ভেঙে ভেঙে অনেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করছেন। এতে বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আজ সকাল থেকে বেশ কিছু দোকানপাট খুলছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বুধবার ও এর আগের অবরোধ কর্মসূচিতে এসব দোকানপাট বন্ধ ছিল। বিপণিবিতানও খোলা রাখতে দেখা গেছে, তবে বিপণিবিতানের ফটকগুলোয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকাতেও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল আরোহীদের যাত্রী পরিবহনের জন্য কথা বলতে দেখা যায়।
হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় কথা হয় মিনহাজ তালুকদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে মৌলভীবাজারের জুড়ীতে যাবেন। অবরোধ থাকায় বাস চলাচল করছে না। আলাদা করে গাড়ি নিয়ে যাবেন এতেও মন সায় দিচ্ছে না। এখন ভেঙে ভেঙে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজছেন। অটোরিকশায় প্রথমে ফেঞ্চুগঞ্জ, এরপর সেখান থেকে আবার রাজনগর যাবেন। পরে জুড়ীর জন্য আলাদা অটোরিকশা নেবেন।
এদিকে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ সমর্থনে বিক্ষোভ ও পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজী এলাকায় সড়কে বিক্ষোভ করেছেন অবরোধ সমর্থনকারী ব্যক্তিরা। এ সময় তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা ওই সড়কে চলাচল করা দু–একটি যানবাহনকে ধাওয়া দেন।
এদিকে সকাল সাতটার দিকে সিলেট নগরের শাহী ঈদগাহ এলাকায় অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীরা। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় অবরোধ চলাকালে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় কয়েক শ নেতা–কর্মী নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন অবরোধ সমর্থনকারী ব্যক্তিরা।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন করলেও সরকার তাদের ওপর হামলা করছে, মামলা দিয়ে যাচ্ছে। নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। তাঁদের পরিবার-পরিজনদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে এসব করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। এক দফার আন্দোলন সফল করেই ঘরে ফিরবেন তাঁরা।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত সিলেটের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর রয়েছে।