হিমাগারে, বাজারে সরকার–নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না

হিমাঘর থেকে আলু বের করে বাছাই করছেন শ্রমিকেরা। আজ রোববার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের রিভারভিউ কোল্ডস্টোরেজে
ছবি: প্রথম আলো

সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পর থেকে আলু বিক্রি প্রায় বন্ধ মুন্সিগঞ্জের হিমাগারগুলোতে। আজ রোববার সকালে মুন্সিগঞ্জের দুটি হিমাগার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অথচ আজ থেকে পাকা রসিদের মাধ্যমে ২৬ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে হিমাগার থেকে আলু বিক্রির কথা বলেছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গতকাল শনিবার মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর এলাকার রিভারভিউ কোল্ডস্টোরেজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছিলেন। তিনি ওই সময় আরও বলেছিলেন, রসিদের মাধ্যমে আলু বিক্রির বিষয়টি মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেখবেন। মজুতদারেরা এই দামে আলু বিক্রি না করলে প্রশাসন এ দামে আলু বিক্রি করে যাঁর আলু তাঁকে টাকা দেবে। তাঁর আশা, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাজার পরিস্থিতি ঠিক হবে। সরকার–নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হবে।

তবে এ দামে আলু বিক্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হিমাগারে আলু মজুতদার ব্যবসায়ীরা। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ মাল্টিপারপাস কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা জটলা করে বসে আছেন। সেখানে কোনো ক্রেতা ছিলেন না। আলু বিক্রি করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা।
একই চিত্র দেখা যায় রিভারভিউ কোল্ডস্টোরেজে গিয়েও। তবে সেখানে হিমাগার থেকে আলু বের করে বাছাই করছিলেন শ্রমিকেরা। বাছাই করা আলু বস্তায় ভরে ট্রাকে তোলা হচ্ছিল। এসব আলুর মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই চট্টগ্রামের আড়তে পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেছিলেন, আলু সরবরাহ বা বিক্রির সময় প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে। কিন্তু আজ ওই হিমাগারে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা বা তাঁদের পক্ষের কারও কোনো নজরদারি চোখে পড়েনি।

খুচরা পর্যায়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার বড় বাজারগুলোতে সরকারের বেঁধে দেওয়া ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। এসব বাজারের ব্যবসায়ীরা ৪২-৪৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছেন। সরকার–নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন, আড়তে আলুর দাম কমেনি। এখনো ৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার পর্যন্ত আলু পৌঁছাতে ৪১ টাকা করে দাম পড়ছে।

সরকার–নির্ধারিত মূল্যে যেহেতু আলু বিক্রি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করব। কেউ যদি নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করতে না চান, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
আফিফা খান, ইউএনও,মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা

হিমাগারে আলু বিক্রির কার্যক্রম তদারকি ও নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি না করার বিষয়ে কথা বলার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাফর রিপনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তবে এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিফা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল থেকে উন্নয়ন মেলা নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। এ জন্য হিমাগারগুলো পরিদর্শন করা হয়নি। আমরা হিমাগারগুলোতে যাব। সরকার–নির্ধারিত মূল্যে যেহেতু আলু বিক্রি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করব। কেউ যদি নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করতে না চান, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

আরও পড়ুন