শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিন শতাধিক, শহীদ মিনার আছে ৩৭টিতে

স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় ফেনীর সোনাগাজীর উপজেলার কুঠির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষে বাঁশ ও কাগজ দিয়ে তৈরী করেছে শহীদ মিনার। আজ বিকেলে উপজেলার কুঠির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরেপ্রথম আলো

ফেনীর সোনাগাজীতে তিন শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৩৭টিতে। বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এ অবস্থায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথভাবে পালন করা যাচ্ছে না। কিছু প্রতিষ্ঠানে কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি, কাঠ ও কাপড় দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি সম্মান জানানো হয়।

উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১১০টি। এর মধ্যে শুধু ১৬টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। ২৪টি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ১৮টিতে। মাধ্যমিক পর্যায়ের ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৫টি। এর কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই। এ ছাড়া ৪৬টি কিন্ডারগার্টেন, ১৯টি আলিয়া ও শতাধিক কওমি মাদ্রাসার কোনটিতেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি।

উপজেলার চারটি কলেজের মধ্যে তিনটিতে শহীদ মিনার রয়েছে। শুধু এনায়েত উল্যাহ মহিলা কলেজে শহীদ মিনার নেই। কলেজটির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নাফিসা আক্তার বলে, কলেজে শহীদ মিনার না থাকায় ২১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খলিল বলেন, তাঁদের মাদ্রাসায় জায়গা–সংকটের কারণে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি। অল্প কিছুদিনের মধ্যে মাদ্রাসায় একটি নতুন ভবন নির্মাণের চেষ্টা চলছে। সেই ভবনের পাশে জায়গা করে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ এলাকার বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুল আমিন বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে কিছু বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকলেও শহীদ দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নতুন প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিষয়ে সচেতন করতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থসংকটের কথা বলে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিতে চায় না। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায়।