বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারে পোশাকশ্রমিকদের ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে হেমায়েতপুরের পদ্মার মোড় এলাকার রাকেফ অ্যাপারেলস ওয়াশিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকেরা এ অবরোধ করেন। পরে সন্ধ্যা সাতটায় বেতনের আশ্বাস পেলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকেরা।
অবরোধ চলাকালে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম হেমায়েতপুর হয়ে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের দিকে যাচ্ছিলেন। অবরোধে তাঁর গাড়ি প্রায় ২০ মিনিট আটকে থাকে। পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাঁকে বিকল্প পথে গন্তব্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানাটির শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন এখনো দেওয়া হয়নি। বেতনের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) আন্দোলনে নামলে সোমবারের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ওই পোশাক কারখানার ৬০০ শ্রমিককে গত মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল। আমি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলে তাঁরা বেতন দেওয়া হবে বলে জানান। দুপুরের দিকে বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমি দায়দায়িত্ব নিতে পারব না বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিই। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে কারখানার জেনারেল ম্যানেজার আকবর আলী মুঠোফোনে যোগাযোগ করে আগামী বুধবার (২৪ আগস্ট) বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।
কারখানার শ্রমিক রুহিলা বেগম বলেন, ‘এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বাড়তেছে। তার মধ্যে যদি বেতন না দেওয়া হয়, তাইলে সংসার চালাই ক্যামনে, বাসা ভাড়াই দিই ক্যামনে। বাধ্য হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’
রাকেফ অ্যাপারেলস ওয়াশিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) আকবর আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব আমাদের পোশাক কারখানায় খুব বাজেভাবে পড়েছে। আজকের আন্দোলনে শ্রমিকদের কোনো দোষ নেই, আমরা নিজেরাই তাঁদের দুইবার বেতন দেওয়ার তারিখ দিয়ে মিস করেছি। আশা করছি, ২৪ আগস্ট বেতন বুঝিয়ে দিতে পারব।’
সাভার মডেল থানার ট্যানারি ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রাসেল মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, অবরোধের খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা সড়ক ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে মালিকপক্ষ বকেয়া বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন।