নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই নাফাখুম ঝরনায় যান ১৭ পর্যটক, গোসলে নেমে একজন নিখোঁজ
বান্দরবানের থানচি উপজেলার নাফাখুম ঝরনায় গোসলে নেমে এক পর্যটক নিখোঁজ রয়েছেন। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে ঢাকা থেকে নাফাখুমে গিয়েছিলেন ওই তরুণ পর্যটক। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নিখোঁজ হন। আজ শনিবার বেলা একটা পর্যন্ত ওই পর্যটকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ ওই পর্যটকের নাম ইকবাল হোসেন (২৫)। পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বাড়ি ঢাকার ডেমরার রসুলনগরে। তাঁর বাবার নাম মফিজুল ইসলাম ও মায়ের নাম রাশিদা বেগম।
উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল সকালে আলীকদম ও তিন্দু হয়ে ইকবালসহ ১৭ জন নাফাখুমে গিয়েছিলেন। সারা দিন থাকার পর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরা সবাই ঝরনায় গোসলে নামেন। একপর্যায়ে ইকবাল ঝরনার পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হন। তাঁকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে।
জানতে চাইলে থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, ১৭ জন পর্যটকের অন্য ১৬ জন উপজেলা সদরে ফিরে এসেছেন। ইকবাল হোসেনের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল্লাহ আল-ফয়সাল বলেন, ‘পর্যটকেরা প্রশাসনকে অবহিত করে সেখানে যাননি। এমনকি সঙ্গে স্থানীয় কোনো ট্যুরিস্ট গাইডও নিয়ে যাননি। ঢাকা থেকে আলীকদম ও তিন্দু হয়ে সরাসরি নাফাখুমে গিয়েছেন। প্রশাসন কেবল তিন্দু বড় পাথর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করছে। রেমাক্রি ও নাফাখুমে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকা জায়গায় তাঁরা কীভাবে গেলেন, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
২০২২ সালের ২০ অক্টোবর রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। ওই বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে এ তিন উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা বাড়তে থাকে। কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার যোগাযোগের অভিযোগও ওঠে। ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর থেকে যৌথ বাহিনী কেএনএফ ও শারক্বীয়ার জঙ্গিদের দমনে অভিযান শুরু করলে নিরাপত্তার কারণে ২০ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
পরে ধাপে ধাপে কয়েকটি এলাকায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রোয়াংছড়ির দেবতাখুমও খুলে দেওয়া হয় পর্যটকদের জন্য। গত ৬ জুন থেকে রুমা উপজেলার বগা লেক, থানচি উপজেলার তুমাতঙ্গি ও তিন্দু পর্যন্ত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। পরে রুমার কেওক্রাডংও খুলে দেওয়া হয়েছে।