বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হেরে গেল ছোট্ট ইফরানও

শিশুর লাশ
প্রতীকী ছবি

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে মা ও ছেলের হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন পর বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হেরে গেল এক বছরের শিশুসন্তান ইফরান হোসেন। গতকাল শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়।

ইফরানের মামা আবু কায়সার বলেন, জমি ও টাকাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁর বোন ও বড় ভাগনেকে হত্যার পর ছোট ভাগনে ইফরানকেও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে মৃত ভেবে বিছানায় ফেলে যায় ঘাতকেরা। গত বুধবার মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। গতকাল রাতে তার মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চর ডুব্বা এলাকার নুর নবীর বাড়ির একটি ঘর থেকে বিবি হাজেরা ও তাঁর ছয় বছরের ছেলে ইমরান হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর এক বছর বয়সী আরেক ছেলে ইফরান হোসেনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ফেনীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সহায়’–এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে বিবি হাজেরার মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে হাজেরার স্বামী মো. সোহেলকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন হাজেরার ভাশুর মো. সাইফুল ও তাঁর স্ত্রী নাজমা আক্তার, দেবর মো. দিদার ও তাঁর স্ত্রী নয়ন বেগম, শাশুড়ি কমলা বেগম। মামলায় কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। আসামিরা সবাই উপজেলার চর ডুব্বা এলাকার বাসিন্দা।

মামলার পরদিন ফেনী ও সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ মো. সাইফুল, মো. দিদার, নুরুল আফসার, মো. হানিফসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে দুজন এজাহারভুক্ত আসামি ও অপর দুজন সন্দেহভাজন।

এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ রোববার ময়নাতদন্ত শেষে ইফরানের লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামি সোহেলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।