ফুলছড়িতে লাশ নিয়ে থানা ঘেরাও, পুলিশের লাঠিপেটা
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে জমি নিয়ে হামলায় নিহত হওয়ায় ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তি লাশ নিয়ে স্বজন ও এলাকার লোকজন এই কর্মসূচি পালন করেন।
ওই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তাঁরা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেন।
আজ দুপুর সাড়ে তিনটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছিল। এ সম্পর্কে ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাফিকুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, নিহত ব্যক্তির স্বজন ও গ্রামবাসীরা লাশ নিয়ে থানায় এলে পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটিকাটি হয়। পরে তাঁদের কাছ থেকে লাশ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
নিহত নুরুন্নবী মিয়ার (৫০) বাড়ি ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামে। প্রতিবেশী গোলজার মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল তাঁর। এর জের ধরে গতকাল সোমবার সকালে নুরুন্নবী মিয়া ও গোলজার মিয়ার কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে গোলজার মিয়া ও তাঁর লোকজন হামলা চালান। এতে নুরন্নবী মিয়াসহ অন্তত আটজন আহত হন। গুরুতর আহত নুরুন্নবী মিয়াকে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা যান।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নুরুন্নবী মিয়ার ছেলে সোয়াইব হাসান (১৯), স্বজন নুরুজ্জামান মিয়া (৩০), আবদুস ছাত্তার (৪৫), নুরবানী বেগমের (৪৫) নাম জানা গেছে। তাঁদের মধ্যে আহত চারজন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে আজ সকালে ফুলছড়ি থানার সামনে অবস্থান নেন স্বজন ও এলাকাবাসী। তাঁরা থানার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পুলিশ লাশ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
পরে তাঁরা দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেন। এ সময় বক্তব্য দেন নিহত নুরুন্নবী মিয়ার মেয়ে নুরানী খাতুন, স্বজন শামসুজ্জোহা, মতিয়ার রহমান প্রমুখ। বক্তারা, খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানান।
পরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওই ঘটনায় গতকাল বিকেলে দুই পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল। নিহত নুরুন্নবী মিয়ার স্বজনের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী দুজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদেরও ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।