সংস্কারে ধীরগতি, ভোগান্তি

সংস্কারকাজের উদ্বোধন হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। মেয়াদ শেষ হবে এ বছরের ডিসেম্বরে।

সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকার লোকজন। গত শনিবার মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধলার মোড় এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

প্রায় এক যুগ পর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী-কাজিপুর সড়কের পাঁচ কিলোমিটার সংস্কার করা হচ্ছে। সড়কের ওই অংশের বিভিন্ন স্থানে ইট, বালু, খোয়া ফেলে কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) গাংনী উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, কাথুলী-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়কের দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ধলার মোড় থেকে মাইলমারি পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারের সংস্কার ও পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। কাজের মেয়াদ এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। কাজের দায়িত্বে কুষ্টিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইছানুল হক। তবে গাংনী পৌর শহরের বাসিন্দা আকাশ শেখ কাজের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন।

এ বিষয়ে আকাশ শেখ বলেন, সড়কের বেশিরভাগ কাজ হয়ে গেছে। রোলার দিয়ে খোয়া বালি সমান করে বিটুমিন গলিয়ে পাকা করা হবে। সম্প্রতি বিদেশ থেকে বিটুমিন এলসির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে ঝামেলা হচ্ছে। এসব কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে।

চলতি বছরের শুরুতে সড়কের খানাখন্দ পরিষ্কার করে বালু, খোয়া ফেলে রোলার দিয়ে সমান করেন ঠিকাদার। কাজ শুরু হতে দেখে এলাকার মানুষ আশায় ছিলেন দ্রুতই তাঁদের ভোগান্তি শেষ হবে। কিন্তু এক বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধলার মোড়ে এবড়োখেবড়ো খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। খোয়ার ওপর দিতে মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে। ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, ভ্যান চলাচল করতে বেগ পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দাদের। ইট-বালু ফেলা সড়কের অনেকাংশ পাশের পুকুরে ধসে পড়েছে। ওই সড়ক দিয়ে ছোট যান চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী সোহবার হোসেন বলেন, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী। কৃষি জমিতে সেচ দিতে শ্যালো ইঞ্জিনে প্রচুর পরিমাণে ডিজেল লাগে। সড়ক বেহাল হওয়ায় ডিজেল নিয়ে গাড়ি এখানে আসতে চায় না। কৃষকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন ভরা মৌসুমে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে। ভ্যান, রিকশা, ইজিবাইকও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে চায় না।

ধলার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভ্যানচালক তাজুল ইসলাম। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, সামান্য এইটুকু রাস্তা নির্মাণ করতে এত দিন লাগে। আগে ছিল খানাখন্দ সড়ক। এখন এবড়োখেবড়ো খোয়ার কারণে ভ্যানের টায়ার ছিদ্র হয়ে যায়। ভ্যানে ১০ মণ মালও নেওয়া যায় না।

রাধাকুষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ইজিবাইকচালক লিয়াকত হোসেন বলেন, আশপাশের প্রতিটি এলাকায় সড়কের অবস্থা মোটামুটি ভালো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেহাল এই সড়ক। উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, সড়কের কাজে গতি আনতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজে বেশি দেরি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।