বিয়ের অনুষ্ঠানে তরকারি কম দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, বরের বাবার মৃত্যু

নীলফামারী জেলার মানচিত্র

নীলফামারীতে বিয়ে বাড়িতে খাবার পরিবেশনের সময় তরকারি কম দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা–কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে বরের বাবার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার জলঢাকা পৌরসভার আমরুলবাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম নূর মোহাম্মদ। তিনি রংপুর নগরের উত্তর বাওয়াই পাড়া হাজীরহাট এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় কনের বাবা মো. আনোয়ারুল্লাহ (৬৩) ও প্রতিবেশী বাবুল ইসলামকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। জলঢাকা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমরুলবাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল্লাহর মেয়ে জান্নাতুল আকতারের সঙ্গে নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. জোনাব আলীর বিয়ে হয় ১৪ দিন আগে। গতকাল বউভাতের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে বরপক্ষের আমন্ত্রিত অতিথির চেয়ে বেশি লোকজন চলে আসেন। এতে খাবার কম পড়ে। প্রথম একদলের খাওয়ার পর দ্বিতীয় দলের খাওয়ার সময় তরকারি কম দেওয়া নিয়ে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বরের বাবা নূর মোহাম্মদ মাটিতে ঢলে পড়েন। তাঁকে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জলঢাকা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ফজলুল হক বলেন, বেশি বরযাত্রী আসার কারণে খাবার কম পড়ে। বরযাত্রীকে তরকারি কম দেওয়ার কারণে বচসার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এ অবস্থায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বরের বাবা মারা যান।

অবশ্য নূর মোহাম্মদের মামাতো ভাই মো. হামিজ উদ্দিন (৫০) বলেন, রাত ১০টার দিকে তাঁরা বরযাত্রী আসেন। প্রথমে গেট ধরা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এক হাজার ১০০ টাকা দিয়ে ফয়সালা হয়। এরপর ৫০ জনের মত লোককে খাওয়াতে বসানো হয়। বরযাত্রীর পাতে মাংস দিতে বললে কনে পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে বচসায় জড়ায়। এর পর তারা বর এবং বরের ভগ্নিপতিকে মারধর করেন। বরের বাবা তাঁদের রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাকে পেছন দিক থেকে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে মারা হয়। এ অবস্থায় বরের বাবা জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান।

এ বিষয়ে জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কবির বলেন, এ ঘটনায় নিহত নূর মোহাম্মদের ছেলে বর মো. জোনাব আলী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মেয়ের বাবা আনোয়ারুল্লাহসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।