চালক শৌচাগারে, গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা যাত্রীর, উল্টে দম্পতিসহ নিহত ৩
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেট কার উল্টে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের ষোলঘর যাত্রীছাউনি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় প্রাইভেট কারের এক যাত্রী আহত হন।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন দোহারের সাইনপুকুর এলাকার মো. তানজিল (২৫)। রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার মো. আরমান হোসেন (২৫) ও তাঁর স্ত্রী রাইসা (২০)। আহত ব্যক্তির নাম রবিন হোসেন (২২)। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা প্রাইভেট কারটি ভাড়া করে ঢাকা থেকে মাওয়ায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
চালক শৌচাগারে থাকা অবস্থায় প্রাইভেট কারটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। প্রাইভেট কারটির চালক মন্টু মিয়া বলেন, ‘সারা রাত ঘোরাঘুরি শেষে ফজরের পর ঢাকার দিকে ফিরতে শুরু করি। একসময় টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন হলে বিষয়টা যাত্রীদের জানাই। গাড়ি নিয়ে তেলের পাম্পে যাই। সেখানে পার্কিং করার পর গাড়িতে থাকা ওই চারজন নামেননি। তাঁরা আমাকে গাড়ির এসি চালু রাখতে বলেন। গাড়ির এসি চালু করার কারণে চাবিসহ গাড়িটা রেখে যেতে হয়। টয়লেট থেকে ফিরে এসে দেখি, গাড়ি নাই। আমি তৎক্ষণাৎ বিষয়টা মালিককে জানাই।’
প্রাইভেট কারটির মালিক আমির হোসেন হিমেল বলেন, ‘চালকের মাধ্যমে জানতে পেরে তখন গাড়ি ভাড়া নেওয়া তানজিলকে একাধিকবার ফোন করি। তবে তানজিল ফোন রিসিভ করেননি। পরে তানজিলের ফোন থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে জানান গাড়িটি দুর্ঘটনায় পড়েছে।’
স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে ছুটছিল। সকাল সোয়া ৬টার দিকে গাড়িটি ষোলঘর যাত্রীছাউনির সামনে পৌঁছালে সড়ক বিভাজকের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে প্রাইভেট কারটি উল্টে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তানজিল ও আরমানের মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাঁদের শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নারীসহ তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অসৎ উদ্দেশ্যে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এ দুর্ঘটনার কারণ বলে জানান হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম ছিদ্দিক। তিনি বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।