মৌলভীবাজার-২ আসনে ২৭ বছর পর জয়ী আওয়ামী লীগ

মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া উপজেলা) আসনে ২৭ বছর পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন শফিউল আলম চৌধুরী
ছবি: প্রথম আলো

দীর্ঘ ২৭ বছর পর মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে জয়ের মুখ দেখল আওয়ামী লীগ। গতকাল রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী ওরফে নাদেল নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। তিনি এবারই প্রথম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁর বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, মোট ১০৩ কেন্দ্রে শফিউল আলম চৌধুরী ৭৩ হাজার ৫২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম সফি আহমদ ওরফে সলমান (ট্রাক) পান ১৫ হাজার ১৬৮ ভোট। সফি আহমদ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে সুলতান মনসুর দলীয় মনোনয়ন পেলেও বিএনপির ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ এম এম শাহীনের কাছে হেরে যান। এক-এগারোর সময় দলের সঙ্গে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের দূরত্ব তৈরি হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পান আতাউর রহমান ওরফে শামীম। কিন্তু তিনি জয়লাভ করতে পারেননি। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নওয়াব আলী আব্বাস খান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন।

২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থী মহিবুল কাদের চৌধুরীকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ আবদুল মতিন জয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এ আসন মহাজোটের শরিক বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী এম এম শাহীনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিএনপির সাবেক এই নেতা নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের (গণফোরাম) প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

২৭ বছর পর দলীয় প্রার্থী হিসেবে জয়ী হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় শফিউল আলম চৌধুরী আজ সোমবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুলাউড়ার সর্বস্তরের মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট দিয়েছেন, আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। এ জন্য কুলাউড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কুলাউড়ার উন্নয়নে নিরলস চেষ্টা করে যাব।’

এ আসনে শফিউল আলম চৌধুরীসহ আট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে গতকাল ভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সফি আহমদ আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন।