লক্ষ্মীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা-গুলি, ছাত্রলীগের ৪ কর্মী আহত

লক্ষ্মীপুর জেলার মানচিত্র

লক্ষ্মীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অতর্কিত হামলায় ছাত্রলীগের চার কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে চন্দ্রগঞ্জের কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী এম সজীব গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অন্যদের কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।

আহত অন্যরা হলেন ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুল পাটোয়ারী, সাইফুল ইসলাম ও মো. রাফি। আহত ব্যক্তিরা সবাই চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মাসুদুর পক্ষের অভিযোগ, তাদের ওপর চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ ওরফে বাবলুর পক্ষ এ হামলা করেছে।

এদিকে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। দুপুরে দিকে পুনরায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন আহত ব্যক্তিদের সমর্থকেরা।

পুলিশ ও আহত ব্যক্তিরা বলেন, ঘটনার সময় তাঁরা কয়েকজন পাঁচপাড়া এলাকার যদির পুকুরপাড়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা ও গুলি চালানো হয়। পরে তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত সজীব, সাইফুল ও রাফির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আহত জয়কে সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বলেন, গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা তাঁর নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাঁদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়। এতে চারজন আহত হয়েছেন। তাঁদের শরীরে ছররা গুলির আঘাত রয়েছে।

মাসুদুর দাবি করেন, ‘রমজানের শুরু থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর সঙ্গে আমার বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে আমার লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। কাজী মামুনুর রশিদ এক পক্ষে, আর পুরো আওয়ামী লীগ আরেক পক্ষে। কাজী মামুনুর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদে থাকলেও তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। এ নিয়েই তাঁর সঙ্গে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছাবির আহম্মেদের বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।’

তবে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ ওরফে বাবলুর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমি বা আমার কোনো সমর্থক জড়িত না। মাসুদের গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।’

চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজ উদ্দিন বলেন, যদির পুকুরপাড় এলাকায় হামলা-মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।