প্রতারণা করে প্রবাসফেরত কর্মীদের টাকা নেন ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী, পরে ফেরত

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে রূপালী ব্যাংকের শাখায় প্রবাসফেরত ১৭ জন কর্মীর প্রণোদনার টাকায় ভাগ বসিয়েছেন ওই ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল ইসলাম। প্রবাসফেরত কর্মীদের রূপালী ব্যাংকের হিসাব খুলে দিয়ে তাঁদের স্বাক্ষরিত তিনটি চেকের পাতাসহ পুরো চেকবই ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী নিজের কাছে রেখে দেন। প্রণোদনার টাকা ব্যাংকে জমা হওয়ার পর স্বাক্ষরিত চেকে প্রণোদনার পুরো সাড়ে ১৩ হাজার টাকা তুলে নিয়ে প্রবাসফেরত কর্মীদের ৮ হাজার করে দেন তিনি।

প্রতারিত প্রবাসফেরত কর্মীরা আজ সোমবার দুপুরে রূপালী ব্যাংকের ওই শাখায় গিয়ে ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীর কাছে বাকি টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে ব্যাংকে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মী প্রবাসফেরত চারজনকে তিন হাজার টাকা করে ফেরত দেন। এ সময় আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমার সামনে রূপালী ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল চারজন প্রবাসফেরত কর্মীকে তিন হাজার টাকা করে ফেরত দিয়েছেন। অন্যদের একইভাবে টাকা ফেরত দেবেন বলে নিরাপত্তাকর্মী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

রূপালী ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী শহিদুলের বাড়ি উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নে। প্রবাসফেরত কর্মীদের বাড়িও একই এলাকায়।

ভুক্তভোগী প্রবাসফেরত কর্মীরা বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে শহিদুল তাঁদের ৫ থেকে ৬ জনকে ব্যাংকে ডেকে ৮ হাজার করে টাকা হাতে দেন। এ নিয়ে শহিদুলের সঙ্গে তাঁদের কথা-কাটাকাটি হয়। সেই সময় শহিদুল তাঁদের বাকি টাকা ২০ মে দেওয়ার কথা বলেন। আজ তাঁরা বাকি টাকা নিতে ব্যাংকে আসেন। তখন শহিদুল তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপর তাঁরা বিষয়টি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে গিয়ে জানান। সেখানে কলেজ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি কাজী শফিউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। কাজী শফিউদ্দীনের মধ্যস্ততায় তিন হাজার করে টাকা দিতে চান। এতে তাঁরা রাজি হননি। এরপর তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানান। ইউএনও মনজুরুল আলম রূপালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বিকেলে চারটায় তাঁদের ব্যাংকে ডেকে নিয়ে মেয়র শহিদুল আলম চৌধুরীর উপস্থিতিতে চারজনকে তিন হাজার করে টাকা ফেরত দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল বলেন, ‘আমি মিটমাট করে নিয়েছি।’

আক্কেলপুরের ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, ‘প্রবাসফেরত কর্মীদের টাকা কৌশলে কম দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা আমার কাছে এসে মৌখিক অভিযোগ করেন। তাঁদের আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে রূপালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর প্রবাসফেরত কর্মীরা আর আমার কাছে আসেননি।’