সুনামগঞ্জে ‘আম-ছালা’ সবই গেল বিএনপির বহিষ্কৃত ৫ নেতার

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলায় ভোট হয়েছে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চার উপজেলায় বিএনপির পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সব কটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা, বিএনপির কেউ জিততে পারেননি।

সাধারণ ভোটার ও দলীয় কর্মীরা বলছেন, ওই নেতাদের ‘আম-ছালা’ সবই গেছে। একদিকে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন, অন্যদিকে নির্বাচনে ব্যয় করা শ্রম ও অর্থ বিফলে গেছে।

সুনামগঞ্জে গতকাল চারটি উপজেলায় ভোট হলেও চেয়ারম্যান পদে বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা আলোচনায় ছিলেন। জামালগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি (বহিষ্কৃত) নুরুল হক আফিন্দী। তিনি উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান।

একাধিকবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। এবার প্রার্থী হওয়ার পর দল বহিষ্কার করলেও পাত্তা না দিয়ে মাঠে ব্যাপক প্রচারণা চালান।

ভোটের মাঠে আলোচনা ছিল—জামালগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতা অন্য দুই প্রার্থীর ভোট ভাগাভাগির সুযোগে নুরুল হক আফিন্দী বের হয়ে আসতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম নির্বাচিত হন। রেজাউল করিম পেয়েছেন ২৮ হাজার ৯০৩ ভোট। নুরুল হক আফিন্দী পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৪৫ ভোট। ১৩ হাজার ৫৬০ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল তৃতীয় হয়েছেন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এবার বেশ আলোচনায় ছিলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ। এখানে আওয়ামী লীগের তিন নেতা প্রার্থী হয়েছিলেন। বিএনপির ছিলেন দুজন। কিন্তু আলোচনা অনুযায়ী ভোট পাননি হারুন। ভোটের হিসাবে তিনি চতুর্থ হয়েছেন। এখানে ১৬ হাজার ১৯২ ভোট পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তালুকদার জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার বর্মণ ১৪ হাজার ৮৩২ ভোট পেয়েছেন। হারুনুর রশিদ পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২২ ভোট। এখানে বিএনপির বহিষ্কৃত আরেক নেতা মোহন বাচ্চু ১২ হাজার ৮৮৪ ভোট পেয়েছেন।

তাহিরপুরে চেয়ারম্যান পদে মোট ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন ৩৭ হাজার ৪৩৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খান ২৩ হাজার ৫৩০ ভোট পেয়েছেন। উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আবুল কাশেম মাত্র ৪ হাজার ৪৬০ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।

ধর্মপাশা উপজেলায় এবার জয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ (মুরাদ), পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪৯৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক শামীমা ১১ হাজার ৪৭২ ভোট পেয়েছেন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী প্রার্থী হলেও আলোচনায়ই আসতে পারেননি। ভোটের ফলে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ছয়জনের মধ্যে তাঁর অবস্থান ষষ্ঠ। পেয়েছেন ২ হাজার ৬৬২ ভোট।